গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
0

হবিগঞ্জে বন্যায় আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি

অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল আর বন্যায় হবিগঞ্জে আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষাবাদে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের বিপর্যয়। এর ফলে চলতি বছর জেলায় প্রায় ৭৭ হাজার টন ধানের ঘাটতি দেখা দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যাতে রয়েছে আউশের ওপর নির্ভরশীল কৃষক পরিবারে খাদ্যঘাটতি দেখা দেয়ার শঙ্কা।

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার নকলাউক গ্রামের কৃষক আসাদুল হক। এবার ১৫ বিঘা জমিতে আউশ আবাদ করেছিলেন। কিন্তু অতিবৃষ্টি আর বন্যায় ১২ বিঘা খেতের ধান গাছ নষ্ট হয়েছে। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি।

আসাদুল হক বলেন, 'প্রথম তো বৃষ্টির জন্য আবাদ করতে পারি নাই। এরপর এমন বৃষ্টি হইছে যে আর লাগাইতেই পারি নাই। শেষে সময়ই শেষ হয়ে গেছে।'

জেলা কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদের লক্ষ্য ধরা হয়। তবে ৩৮ হাজার ১৪৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হওয়ার পরই অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল শুরু হয়। এতে পানিতে তলিয়ে যায় আবাদ হওয়া ৬৩৬ হেক্টর ফসলি জমি।

বন্যা পরিস্থিতির কারণে জেলার ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ করতে পারেননি কৃষকরা। এতে বছর শেষে ধান উৎপাদনে ঘাটতি থাকবে ৭৭ হাজার টনের বেশি। ফলে আউশের উপর নির্ভরশীল কৃষক পরিবারগুলোতে দেখা দেবে খাদ্যের মজুদে ঘাটতি।

জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত আউশ ধান চাষের সময়। ফলে পানি নেমে গেলেও চলতি বছর নতুন করে বীজতলা তৈরি করে চাষের সুযোগ নেই বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরে আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, 'প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার হেক্টর আউশের জমি রুপা আমন আবাদে রুপান্তর হবে। আমরা যদি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আউশের জমিগুলোতে আমন আবাদ করতে সক্ষম হই, তাহলে ক্ষতিটা রুপা আমন দিয়ে পুষিয়ে নিতে পারবো।'

হবিগঞ্জে আউশ ধানের যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে তার আর্থিক পরিমাণ ৮-১০ কোটি টাকা। একইসাথে ঘাটতির কারণে বছর শেষে বাজারে ধানের সরবরাহ কমে যাবে। অন্যদিকে বাড়বে চালের চাহিদা। ফলে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।