এক সময়ের কর্মব্যস্ত হাস্কিং মিলগুলোতে এখন জীর্ণদশা। ইরি-আমন আর নানা জাতের ধানের মৌসুমে শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞে সরগরম চাতালগুলো এখন শুধুই শুনশান নীরব। বছরের পর বছর ধান ভাঙানোর কাজ না হওয়ায় অলস পরে থাকা মিলের ব্রয়লারে জমেছে ময়লা।
ব্যবসায়িরা বলছেন, সরকারি গুদামে ধান-চালের দাম বাজারের চেয়ে কম হওয়া, অটো রাইসমিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা ও চড়া সুদে ব্যাংক ঋণসহ নানা কারণে এখন বন্ধ চালকলগুলো। আবারও হাস্কিং মিলের সুদিন ফেরাতে সরকারের শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি ব্যবসায়ীদের। তারা জানান, যে দামে ধান বিক্রি করা হয় সেই দামে ধান দিনে চাল বিক্রি করা সম্ভব না। সরকার নির্ধারিত মূল্যের সঙ্গে ধানের দামের কোনো মিল নেই বলেও অভিযোগ তাদের।
ব্যাংক ঋণে সুদ অতিরিক্ত বেশি হওয়ায় আর পেরে ওঠছেন না ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে শত শত নারী পুরুষ শ্রমিক কাজ হারিয়ে এখন বেকার। অনেকে খুঁজে নিয়েছেন অন্য পেশা।
শ্রমিকদের একজন জানান, এখানে মিল চলতো প্রায় ২শ'র মতো। এখন আর চলে না। আমরা সবাই বসে আছি।
হাস্কিং কলগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারন হিসেবে অটো রাইস মিলারদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ চালকল মালিক সমিতির নেতাদের।বগুড়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি এটিএম আমিনুল হক বলেন, '৫ টাকা কেজি ৬ টাকা কেজি চালে লস দিয়ে মিলের চাল দিবে তাহলে তো তার পুঁজি থাকার কথা না । যার জন্য ৬০% মিল বন্ধ হয়ে গেছে।'
এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন এ খাদ্য কর্মকর্তা। বগুড়ার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, 'তারা যদি এভাবে সমষ্টির মাধ্যমে কোনো ধরণের চাহিদা দাবি করে তাহলে বা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এর কাছে উপস্থাপন করে আমরা সেটি সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে পারবো।'
বগুড়া চালকল মালিক সমিতির তথ্যমতে, গেল চার বছরে জেলায় ১ হাজার হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মিল মালিকসহ প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়েছেন।