দেশে এখন
0

ঘন কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ১০টি যানবাহনের সংঘর্ষ

ঘনকুয়াশায় মুন্সিগঞ্জে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অন্তত ১০টি যানবাহন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কাভার্ডভ্যান, মাইক্রোবাস, যাত্রীবাহী বাস একটি অপরটিকে ধাক্কা দেয়। আজ (রোববার, ২২ ডিসেম্বর) ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত অন্তত ছয়টি দুর্ঘটনায় এক জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।

ভোর ৬টায় যখন ঘন কুয়াশা চারিদিকে, দৃষ্টিসীমা আটকায় ২০ ফুট দূরত্বে। তখন দ্রুত গতি আসা কাভার্ড ভ্যান হুট করে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ধীর গতির মাইক্রোবাসকে। দুর্ঘটনার শুরুটা এখান থেকেই।

পরে দুর্ঘটনার শিকার কাভার্ডভ্যানকে ধাক্কা দেয় সাকুরা পরিবহনের একটি বাস। একই সময় এনা পরিবহনের গাড়ি কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দেয় সাকুরা পরিবহনের গাড়িকে। পরে গ্রিন লাইন, গোল্ডেন লাইনসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়া গাড়িগুলোকে ধাক্কা দিতে থাকে।

কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটলো? উত্তরে দুর্ঘটনার শিকার বাস চালক জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিয়ন্ত্রণ হারায় গাড়ি।

বাস চালক বলেন, 'পিছনে কয়েকটা গাড়ি এসে ধাক্কা খেয়েছে। পরে আমার গাড়িও আসে। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে ব্রেকে মারার পরও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।'

অন্য একজন চালক বলেন, 'কুয়াশায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। ১০ থেকে ২০ হাত দূরেও কিছু দেখা যাচ্ছিল না।'

দুর্ঘটনার পরই উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ। ঘন কুয়াশাকেই কারণ বলছেন তারা।

হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, 'আমরা যাত্রীগুলোকে দ্রুত অন্য গাড়িতে শিফট করে দিই। আর প্রাইভেট কারের চালককে রেসকিউ করে শ্রীনগরে প্রেরণ করি। ওখানে চিকিৎসাধীন ছিল। আর অন্য পরিবহনগুলোর যে বাসের ড্রাইভার, হেল্পাররা ছিল তাদের কারও হাত কেটেছে, কারও পা কেটেছে। ছোট ছোট কাটা, তাদের শিফটিং করে অন্য গাড়িতে প্রেরণ করেছি।'

ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, 'ঘন কুয়াশার কারণেই গাড়িগুলোর পেছন থেকে একে অপরকে ধাক্কা মারা। ঘন কুয়াশাই এই দুর্ঘটনার মূল কারণ। এখানে অনেকেই আহত আছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।'

দুর্ঘটনা নাকি অন্য কিছু খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে র‌্যাবের বিশেষ দল।

র‌্যাব-১০ এর কোম্পানি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'মাইক্রোবাসকে প্রথমে একটা কাভার্ড ভ্যান ধাক্কা দেয়। এটা যেহেতু এক্সপ্রেসওয়ে, এটাতে গাড়ির গতি অত্যধিক থাকে। তখন পেছনের গাড়িগুলোর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। পরপর সাতটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়।'

দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ফরহাদ হোসেনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে নেয়ার পথে। গুরুতর আহত জাকিরকে ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠিয়েছেন শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক।

শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ড. ক্যামেলিয়া সরকার বলেন, 'একজন মারা গেছেন, তার নাম হচ্ছে ফরহাদ, বয়স ৪০ বছর। আর একজন এসেছিলেন নাম জাকির হোসেন। তাকে গুরুতর অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল, তাকে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে রেফার করা হয়।'

একই দিন ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে আরও দু'টি দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। ঘন কুয়াশায় চালকদের আরও সতর্কভাবে গাড়ি চালাতে অনুরোধ করেছে হাইওয়ে পুলিশ।

এসএস