হিলি সীমান্তবর্তী জনপদে সেলাইয়ের কাজ করে সংসারে সচ্ছলতা

দেশে এখন
0

হিলি সীমান্তের গ্রামীণ জনপদে সেলাইয়ের কাজ করে সংসারে সচ্ছলতা ফেরাচ্ছেন নারীরা। নানা বয়সী মানুষের পোশাক সেলাই করে উপার্জন করছেন তারা। যা থেকে প্রতিমাসে জনপ্রতি আয় হচ্ছে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। স্বল্প সুদে ঋণ পেলে এ খাতে আরো ভালো করা সম্ভব বলছেন সীমান্তের এই নারীরা। গ্রামীণ নারীদের আরও এগিয়ে নিতে সরকারি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের আশ্বাস মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের।

সীমান্ত লাগোয়া মিশনপাড়া এলাকার রাশেদা বেগম। একসময় তার পুরো সংসার নির্ভরশীল ছিল স্বামীর আয়ে। তবে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন নিজেই সংসারের হাল ধরেছেন। যে আয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি চলছে তিন সন্তানের পড়াশোনার খরচও।

শুধু রাশেদাই নয়; সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন গ্রামের অনেক নারী এখন সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়িতে বসেই এই কাজ করছেন। সংসারের সচ্ছলতা ফেরানোর পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছেন তারা। তবে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সুদে ঋণ পেলে এ খাতে আরো ভালো করার আশা সীমান্তের নারীদের।

রাশেদা বেগম বলেন, ‘সেলাই মেশিনের কাজ শিখে আমি এইটা দিয়ে আমার দুই মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছি। আমাদের আর্থিক যে ঘাটতি ছিল তা পূরণ হয়েছে।’

সরকারিভাবে স্বল্প পরিমাণ সেলাই প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেখানে বেশিরভাগই অংশ নিতে পারেন না। গ্রামীণ নারীদের এগিয়ে নিতে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় এক প্রশিক্ষক, ব্যক্তিগতভাবে এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজারের বেশি নারীকে সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি।

সেলাই প্রশিক্ষক আজিজুল সঞ্চয় বলেন, ‘আমাদের এই সীমান্ত এলাকায় মানুষের তেমন কাজ নেই। তারা যাতে সেলাই মেশিনের কাজ শিখে সংসারে সার্পোট দিতে পারে তার জন্যই তাদেরকে ফ্রি শিক্ষা দিতে হয়।’

এদিকে সীমান্ত এলাকার গ্রামীণ জনপদের অর্থনীতিতে ভূমিকার রাখা নারীদের আর্থিক সহযোগিতা ও আরো উন্নত প্রশিক্ষণের দাবি সমাজকর্মীদের। আর সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের।

দিনাজপুর হাকিমপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিরঞ্জন রায় বলেন, ‘আমাদের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে যেসব গ্রামীণ নারীরা সেলাইয়ের কাজ করে তাদেরকে স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া হয়।’

হাকিমপুর প্রেসক্লাবের যুগ্ম আহ্বায়ক নাগরিক কমিটি ও সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নারীদের আর্থিক সহযোগিতা ও আরো উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য সরকারের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।’

সীমান্তবর্তী উপজেলার গ্রামীণ জনপদে প্রায় হাজারখানেক নারী এখন সেলাইয়ের কাজ করে সচ্ছলতা ফেরাচ্ছেন সংসারে। সেই সাথে ভূমিকা রাখছেন গ্রামীণ অর্থনীতিতে।

ইএ