দেশে এখন
0

অপরিকল্পিত উন্নয়ন যত হবে তত বেশি ধ্বংসের মুখে পড়বে বিশ্ব: ড. ইউনূস

২৯তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সভ্যতা এখন হুমকির মুখে বলে বিশ্বনেতাদের সতর্ক করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, জলবায়ু সংকট তীব্রতর হচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় জ্ঞান, অর্থ আর নতুন প্রজন্ম এক হয়ে কাজ করলে রক্ষা করা যাবে এই সভ্যতা। বুধবার আজারবাইজানের বাকুতে ২৯তম জলবায়ু সম্মেলনে লিডার সামিটে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ‍্যে দেয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। এসময় তিনি জলবায়ু রক্ষায় নতুন করে বিশ্বের সামনে 'থ্রি জিরো' নীতি তুলে ধরেন।

২৯তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। সকাল থেকেই এদিন তিনি সাইড ইভেন্ট আর বিভিন্ন সামাজিক ব্যবসায়ী গ্রুপের সাথে ব্যস্ত সময় পার করেন।

আজারবাইজান স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১ টায় জলবায়ু সম্মেলনে ওয়ার্ল্ড লিডারস অ্যাকশন সামিটে বক্তব্য দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যেখানে শুরুতেই তিনি, জলবায়ু রক্ষায় বিশ্ববাসীকে জিরো কার্বন নিঃসরণ তথা কার্বনমুক্ত জীবনধারা বিনির্মাণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মানুষ এমন কর্মকাণ্ড বেছে নিয়েছে যা পরিবেশকে ধ্বংস করছে। বাড়ছে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব।

বিশ্বমঞ্চে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো এককভাবে শুধু নিজেদের অর্থনীতির উন্নয়নের কথাই ভাবছে। যাতে ব্যয় হচ্ছে প্রচুর অর্থ। এসব অপরিকল্পিত উন্নয়ন যত হবে তত বেশি ধ্বংসের মুখে পড়বে বিশ্ব।’

এসময় তিনি পরিবেশ রক্ষায় বিশ্বের সামনে থ্রি জিরো'র নতুন একটি জীবন তত্ত্ব তুলে ধরেন। যেখানে শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য বর্জ্য ও শূন্য ব্যক্তিগত লাভ- এই তিনের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ব্যবসার দিকে বিশ্বকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান। নবায়নযোগ্য শক্তি বিশ্ব অর্থনীতিকে এগিয়ে নেবে বলেও মনে করেন ড. ইউনূস।

জলবায়ুর বিশ্ব মঞ্চে প্রধান উপদেষ্টার এ ভাষণকে ঐতিহাসিক দাবি করে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার আহ্বানে বিশ্ব সাড়া দিলে দ্রুতই পরিবেশ ধ্বংস বন্ধের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহজেই ক্ষতিপূরণ দেয়াও সম্ভব হবে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, আমাদের যে কনজাম্পশনটি হচ্ছে সেটি সাস্টেইনেবল হচ্ছে না। আমাদের ওয়েস্ট বেশি জেনারেট হচ্ছে, আমাদের কার্বন এমিশন বেশি হচ্ছে। ফলে সমাধানের জন্য উনি একিভাবে টেকনোলজি এবং যুবকদের কাজে লাগিয়ে একটি সমাধান চাচ্ছেন। এ সমাধানে উনি বলছেন সবক্ষেত্রে আমরা যাতে অর্থনীতিকে সম্পৃক্ত করে না ফেলি। আরো একটা বিষয় হচ্ছে আমাদের অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপের দিকে যেতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা এদিন বিকেলে কপ সম্মেলনস্থলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএনডিপি ও জাতিসংঘ প্রধানসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সাইড ইভেন্ট বৈঠকে অংশ নেন।

এএইচ