দেশে এখন
0

ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসা শুরু করেছে চীনের মেডিকেল টিম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছেন চীনের জরুরি মেডিকেল টিম। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাসেবা দেন ১০ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। পরে চায়না দূতাবাসের কাউন্সিলর লি শাওপেং জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে গুরুতর আহতদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে চিকিৎসকরা ঢাকায় এসেছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, যদি প্রয়োজন মনে হয় তবে রোগীদের চীনে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দেবে মেডিকেল টিম।

বৈষম্যহীন বাংলাদেশ দেখতে চাওয়ার অপরাধে হারিয়ে গেছে দৃষ্টিশক্তি। চোখের বিনিময়ে প্রিয় মাতৃভূমি থেকে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান হয়েছে বটে কিন্তু দেখা হয়নি নতুন বাংলাদেশের বিজয় উদযাপন। আর এখন, দেখা হয়না প্রিয়জনদেরও।

আহতদের একজন বলেন, 'দুইটা বাচ্চা আছে আমার। তাদের যত্ন আমার বৃদ্ধ মা বাবা করে।' 

আরেকজন বলেন, 'আন্দোলনের শুরু থেকে ছিলাম। ট্রিটমেন্ট পাইনি। ট্রিটমেন্ট পেলে আমার চোখ ঠিক হয়ে যেত।' 

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে চোখে গুলি লেগে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নেন এক হাজার ৭ জন। আর হাসপাতালে ভর্তি হন ৮শ’ ৬৯। যাদের অনেকেই একচোখে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, আর দু'চোখেরই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন ৩০ জন।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. যাকিয়া সুলতানা নীলা বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটা সীমাবদ্ধতা থাকে। চোখে গুলি সেটার প্রাইমারি চিকিৎসা করা হয়েছে। একটা চোখে যখন বুলেট ঢুকে তখন সে আগের মতো আর চোখ ভালো হয় না।’ 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসাসেবা দিতে চীন থেকে আসেন ১০ সদস্যদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। আজ (সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে গুরুতর ৩০ জন রোগীকে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

চায়না দূতাবাসের কাউন্সিলর জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে গুরুতর আহতদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে চিকিৎসকরা ঢাকায় এসেছেন। আর হাসপাতালের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, প্রয়োজনে রোগীদের চীনে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দেবে এই মেডিকেল টিম।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি যদি কোনো এক্সপার্ট টিম এখানে আসতে চাই তাহলে তাদের আনার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’ 

পরে জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন চীনের চিকিৎসকরা। এখানেও পঙ্গু অবস্থায় ৬৬ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হতে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ৮ শতাধিক। তাদের পর্যবেক্ষণ করেন এই মেডিকেল টিম।

 দুইজন পুলিশ ধরে আমার পায়ে গুলি করেছে। ওদের হাতে পায়ে ধরেছিলাম তাও আমাকে ছাড়েনি। 

জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনবার্সন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী শামীম উজজামান বলেন, ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য চীনের পরামর্শ নেবে বাংলাদেশ।’

আগামী মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট পরিদর্শন করবেন চীনের বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম। তারা আগামী তিন দিন বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর