মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মো. এমদাদ- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারান। তবুও একটুও যেন আফসোস নেই তার। বলেন, ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষায় বাংলাদেশ গঠনের পাশাপাশি জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি ধরে রাখতে হবে। সেইসঙ্গে অনুরোধ জানান, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের যুদ্ধাহত পরিবারের সদস্য দিয়ে পরিচালনা করার।
এমদাদ বলেন, ‘ডাক্তারি একটি মহান পেশা। আমি ডাক্তারদের সম্মান জানাই, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখি। কিন্তু আমি বলতে চাই, তৎকালীন সময়ে আমি, আমরা আমাদের ভাইয়েরা চিকিৎসা পায়নি।’
আন্দোলনে ছাত্র-জনতার পাশাপাশি রাজপথে লড়াইয়ে নামেন অনেক পেশাজীবী- তার মধ্যে একজন স্কুল শিক্ষক নেসারউদ্দিন। আন্দোলনে গিয়ে হারিয়েছেন এক পা, সেসময় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে জানালেন চিকিৎসকদের চরম অমানবিকতার কথা।
এ শিক্ষক বলেন, ‘পায়ের হাড্ডি ভেঙেছে। কাটার মতো কিছু হয়নি। কিন্তু আমাকে বলা হলো পা যদি রাখতে হয়, অনেক কষ্ট হবে। দুই, চার-ছয় মাস লাগবে সুস্থ হতে। তার থেকে কাটলেই তো সুবিধা।’
তাঁদের মতো আন্দোলনে আহত অনেকেই জানিয়েছেন সেসময়ের চিকিৎসা থেকে শুরু করে অবর্ণনীয় প্রশাসনিক দুর্ভোগ।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ সংগঠনের অনুষ্ঠান ‘ওদের ভাবনায় বাংলাদেশ’ আয়োজনে কেমন বাংলাদেশ চাই- সেইসব প্রত্যাশা তুলে ধরেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা।
এসময় একজন জানান, আমার পায়েও রাবার বুলেট লাগে। এক বড় ভাই সে সময় আমাকে হাত ধরে অন্য দিকে নিয়ে যায়। এসময় স্মৃতিচারণ করেন আন্দোলনে হতাহতদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
অভিভাবকরা জানান, আন্দোলনে অংশগ্রহণ করায় নানা রকম হয়রানিসহ সামাজিকভাবে ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদের বক্তব্যে সবারই এক কথা- জুলাই গণহত্যার স্মৃতি ধরে রাখা হবে। পাশাপাশি শহীদ ও আহতদের পরিবারের পাশে থাকারও অঙ্গীকার করেন তারা।
ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে রাষ্ট্র সংস্কারে সন্তানের পাশে অভিভাবক সংগঠন একাত্মতা প্রকাশ করে।