দেশে এখন
0

আশুগঞ্জে নির্মিত হচ্ছে খাদ্যশস্য সংরক্ষণাগার 'স্টিল রাইস সাইলো'

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নির্মিত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী খাদ্যশস্য সংরক্ষণাগার স্টিল রাইস সাইলো। তবে নানা সংকটে কাজ চলছে ঢিলেঢালাভাবে। এ কারণে ২ বছরের প্রকল্প শেষ করা যায়নি ৬ বছরেও। যদিও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতোমধ্যে কেটে গেছে সব সংকট। আগামী ডিসেম্বরেই শেষ হবে নির্মাণকাজ।

আশুগঞ্জের মেঘনা নদীরপাড়ে চলছে স্টিল রাইস সাইলোর নির্মাণযজ্ঞ। আধুনিক এ সাইলোতে স্বয়ংক্রিয় তাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের মাধ্যমে চালের আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত চাল সংরক্ষণ করা যাবে। যার ফলে এটিকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী খাদ্যশস্য সংরক্ষণাগার বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাইস সাইলো নির্মাণে ২০১৮ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের সাথে চুক্তি করে খাদ্য অধিদপ্তর। প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় ধরা হয় দুই বছর। আর নির্মাণ ব্যয় ৫৪০ কোটি ৪৫ লাখ ৪৯ হাজার ২৬৪ টাকা। এ সাইলোতে বিন রয়েছে ৩০টি। প্রতিটির ধারণক্ষমতা সাড়ে ৩ হাজার টন।

বর্তমানে মেঘনা নদী থেকে সাইলো পর্যন্ত জেটি, টপ সাইলো স্টিল ব্রিজ, টপ সাইলো স্টিল কলামসহ অন্যান্য অবকাঠামোর কাজ চলছে। তবে কাজ চলছে কিছুটা ধীরগতিতে। চতুর্থ দফায় বাড়ানো মেয়াদেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, মূলত করোনার কারণে সাইলোর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ যথাসময়ে বিদেশ থেকে আমদানি করা যায়নি। আসতে পারেননি বিদেশি পরামর্শকরাও। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ায় বিলম্বিত হয় প্রকল্পের কাজ।

জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী মো. নিশাত হোসাইন বলেন, 'অতিমারির সময় অনেক সমস্যা ছিল। আমরা সেই সংকট সমাধান করেছি। বর্তমানে আমাদের কাজে কোন বাধা নেই। ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।'

তবে সকল জটিলতা নিরসন হওয়ায় আগামী ডিসেম্বরেই সাইলোর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করেন প্রকল্প পরিচালক রেজাউল করিম শেখ। তিনি বলেন, 'করোনা ও বিদেশি পার্টনারের সাথে ঝামেলার কারণে কাজে দেরি হয়েছিল। তবে সম্প্রতি সব সমস্যা শেষ হয়েছে। তাই ডিসেম্বরে কাজ সম্পন্ন হবে।'

আগামী ডিসেম্বরেই সাইলোটি চালু করার লক্ষ্যে দ্রুত নির্মাণ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চাপে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, 'গোডাউনে চাল বেশিদিন রাখলে নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি চালু হলে চালের পুষ্টিগুণ অটুট রেখে চাল সংরক্ষণ করা যাবে। দুই-তিন বছর পরেও চাল নতুন থাকবে।'

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোন রাইস সাইলো না থাকায় খাদ্য গুদামগুলোতে চাল সংরক্ষণ করতে হয়। তবে গুদামে দীর্ঘসময় চাল রাখতে গিয়ে গুণগত মান নষ্ট হয়। এছাড়া সংগ্রহ ও বিতরণের পর গুদামে জায়গা সংকটের ফলে খাদ্য বিভাগকে উদ্বৃত্ত চাল পাঠাতে হয় পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর