দেশে এখন
0

সারাদেশে ঈদুল আজহা'র জামাত অনুষ্ঠিত

সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা'র জামাতের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (সোমবার, ১৭ জুন) সকালে দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলাগুলোতে এ নামাজ আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তবে বৃষ্টির কারণে অনেকেই ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়তে না পেরে মসজিদে ঈদের জামাত আদায় করেন।

চট্টগ্রামে প্রথম ও প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে সকাল সাড়ে ৭ টায়। সকাল সোয়া ৮ টায় অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় জামাত। এখানে চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তি ঈদের নামাজ পড়েন। এছাড়া জিমনেসিয়াম মাঠে সকাল ৮টায় ঈদ জামাতে অংশ নেন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

এর পরপরই পশু কোরবানিতে দেন মুসল্লিরা। এ বছর প্রায় ৮ লাখ ৮৫ হাজার পশু কোরবানি হয়েছে চট্টগ্রামে। বাড়ির সামনে খোলা স্থান, সড়কের ধারে, খাল, নালার পাশে সুবিধাজনক স্থানে পশু কোরবানি করেন নগরীর মানুষ। তবে যত্রতত্র বর্জ্য ফেলা নিয়ে এবার অনেকেই সচেতন ছিলেন।

রাজশাহীতে ঈদ-উল-আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায় হযরত শাহ মখদুম (র:) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। এসময় দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মুসল্লিরা কোলাকুলি ও একে অপরের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিলেটের ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ ময়দানে ভারি বৃষ্টির কারণে ঈদ জামাত বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ ময়দানে প্রতিবছর ঈদ জামাতে লাখো মুসল্লি অংশ নিয়ে থাকেন। তবে এবার বৃষ্টির কারণে পাঁচশ'রও কম মুসল্লি ঈদ জামাতে অংশ নেন। বৃষ্টির কারণে জামাত সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাতসহ অতিরিক্ত ৬ তাকবীরের সহিত প্রধান জামাত শেষ হয়। এদিকে মধ্যরাত থেকে বজ্রসহ ভারি বৃষ্টি এবং নদীর পানি বাড়ায় নগরীর অধিকাংশ এলাকায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে ঈদের দিনের আমেজ ফিকে হয়েছে নগরবাসীর। ভোগান্তিতে পড়েছেন পশু কোরবানি নিয়েও।

সারাদেশের মতো বরিশালে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা। আজ সকাল ৮ টায় নগরীর বান্দ রোডের হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী, জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রধান জামাতে অংশ নেন। প্রধান ঈদ জামাতকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়াও নগরী এবং জেলার প্রায় সকল মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বরিশালে এবার ১৩২টি ঈদগাহসহ ৫৩৫টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খুলনায় সকাল ৮ টায় নগরীর সার্কিট হাউজ ময়দানে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাত শুরুর আগে ঈদুল আজহার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরে কয়েক হাজার মানুষ একসাথে আদায় করেন নামাজ। ঈদের প্রধান জামাতে বিভাগীয় কমিশনার, সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যার মধ্যেই কোরবানির সব বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলে জানান সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

ময়মনসিংহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে সাতটায় নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে। নামাজে ইমামতি করেন আঞ্জুমান ঈদগাহ মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন। এছাড়াও নগরীর বড় মসজিদ, মার্কাস মসজিদ, ময়মনসিংহ সেনানিবাস, পুলিশ লাইন্স, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ জেলায় দুই হাজার ৪৫০টি ঈদগাহ মাঠ ও মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মাঠের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বৃষ্টির বৈরিতাকে সঙ্গী করে সকাল ৮ টায় রংপুর মডেল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় প্রধান ঈদ জামাত। আকাশ গোমট তাই সামিয়ানার নিচে সবুজ ঘাসে সেজদাবনত হওয়া হয়নি কোনো মুসল্লি'র। ইট পাথর আর কংক্রিটের মসজিদেই ত্যাগের ঈদে হাজারও মুসল্লির সমাগম হয়। এ মসজিদে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হলেও প্রথম জামাতে বিভাগীয় কমিশনার, সিটি মেয়র, সংসদের বিরোধী দলের নেতা, পুলিশ কমিশনারসহ হাজারও মুসল্লি অংশ নেন।

এদিকে ঝালকাঠিতে ৯৬৫টি ঈদগাহে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টায় শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ঈদগাহের প্রধান জামাতে জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌর মেয়রসহ সর্বস্তরের হাজারও মানুষ নামাজ আদায় করেন। জামাতে ইমামতি করেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম। এখানে প্রায় ৫ হাজার মুসল্লির ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা ছিল।