আজ (শনিবার, ৮ জুন) সোহেলী জাহান নামে এক বৃক্ষপ্রেমী গাছকে ভালোবাসে প্রতিবছরের মতো এবারও বৃক্ষমেলায় আসেন গাছ কিনতে। নগর জীবনে নিজের ঘরে একটু সবুজের ছোঁয়া আনতেই যেন কিনেন বিভিন্ন ইনডোর প্ল্যান্ট। তার মতো অনেকেরই ক্যাকটাস এবং ছোট ছোট ইনডোর গাছের প্রতি রয়েছে দুর্বলতা।
আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলেন কেন্দ্র সংলগ্ন মাঠে চলছে মাসব্যাপি বৃক্ষমেলা। মেলায় রয়েছে ১২০টি স্টল। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার চারাগাছ। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকছে মূল ফটক। ইতোমধ্যে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বৃক্ষপ্রেমীরা আসছেন ছাদ বাগান ও অন্দর সজ্জার জন্য বিভিন্ন গাছের চারা কিনতে।
তারা বলেন, গাছ শুধুমাত্র পরিবেশের জন্য নয়, আমাদের বেঁচে থাকার জন্যও প্রয়োজন। এখানে দেশি বিদেশি অনেক ফলের গাছ রয়েছে। বাড়ির ছাদে গাছ থাকলে ছায়া পাওয়া যায় এবং পরিবেশটাও ঠান্ডা থাকে।
প্রতিবারের মতোই এবারও ফল গাছের চাহিদা বেশি। বিদেশি ফলের গাছ গুলো ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা এবং দেশি ফলের গাছ ১০০ থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলেন, নানান ফলের গাছের পাশাপাশি দেশি বিদেশি ফুলের গাছ ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। তবে বড় গাছ বিক্রি কম হচ্ছে। আবার ঘর সাজানোর জন্য বিভিন্ন গাছ মানিপ্লান্ট, অর্কিড, ৪৫০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি করছি। এবার বেচাকেনা আগের চেয়ে ভালো।
গরমের কারণে সকালে মেলায় উপস্থিতি একটু কম থাকে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে যায়। এ পর্যন্ত ৪১ হাজারের অধিক গাছ বিক্রি হয়েছে যার মূল্য ২০ লাখ টাকা টাকার বেশি।
গতবছরের ১৫ কোটি টাকার চারা বিক্রি হয়েছে। এই বছর আরও বাড়বে বলে আশা করেছেন বন কর্মকর্তা রনক রায়।
তিনি বলেন, 'এ বছর যেহেতু অনেক গরম ছিল। অনেকেই তখন গাছ লাগানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জেনেছেন। তাই এবার বিক্রি ভালো হবে।'
মেলায় অংশ নেওয়া নার্সারির বিক্রয়কর্মীরা ঘুরে ঘুরে ক্রেতাদের দেখাচ্ছেন বিভিন্ন গাছ। গাছের নাম, কত দিনে ফল বা ফুল আসবে সেগুলো বলছেন তারা। ক্রেতারাও গাছ দেখছেন, কীভাবে পরিচর্যা করতে হবে, কী সার দিতে হবে জেনে নিচ্ছেন। গাছ পরিচর্যার যন্ত্রপাতি বিক্রিও হচ্ছে বেশ।
আবহাওয়া অনুকূল রাখার জন্য একটি দেশে অন্তত ২৫ ভাগ বন থাকা আবশ্যক। আমাদের দেশে আছে ৬ বা ৭ ভাগ। এ অবস্থায় বৃক্ষ মেলার আয়োজনে মেলা থেকে যেসব গাছের চারা ক্রেতারা ক্রয় করে নিয়ে যান-এসব গাছপালা যে অক্সিজেন সরবরাহ করে তা দেশের তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে বলে মনে করছেন অনকেই।