জিনসেং মূলত মাংসল মূলবিশিষ্ট এক ধরনের উদ্ভিদ। যার বৈজ্ঞানিক নাম প্যানাক্স জিনসেং। ৫ হাজার বছর আগে মাঞ্চুরিয়ার পাহাড়ি ঢালে এই উদ্ভিদ প্রচুর পাওয়া যেত। চীনে তখন এর শিকড় ছিল মানুষের খাদ্য। ক্রমে ক্রমে অসাধারণ গুণাবলী প্রকাশিত হলে এর আধুনিক উত্তরণ ঘটে ওষুধ হিসাবে। এর শিকড় দেখতে অনেকটা মানব দেহের মতো, নিচের দিকে দুভাগ হয়ে যাওয়া পায়ের মত, আবার কখনো দেখা যায় হাত-পা উভয়ই। জিনসেং নামটিও এসেছে চীনা শব্দ ‘রেনশেন’ থেকে যার অর্থ মানুষের পা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জিনসেং-ভিত্তিক প্রসাধনী কোরিয়ান সৌন্দর্য শিল্পে ঝড় তুলেছে। ঔষধি গুণাগুণ, অ্যান্টি-এজিং, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, ময়েশ্চারাইজার এবং স্ট্রেস নির্মূলের গুণাগুণ থাকায় নারীদের কাছে সৌন্দর্য চর্চায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জিনসেং।
কোরিয়ার রূপচর্চায় সাধারণত প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহৃত হয় বেশি। জিনসেং কোরিয়াতে বিশেষ পরিচয় বহন করে। কোরিয়ানদের কাছে এই উদ্ভিদ সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ুর প্রতীক। এছাড়া কয়েক শতাব্দী ধরে দেশটিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জিনসেংয়ের ব্যবহার হয়ে আসছে।
জিনসেং শরীরের রক্ত সঞ্চারকে বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে ত্বকের কোষগুলোতে এর বেশি প্রভাব দেখা যায়। জিনসেং অক্সিজেনের ঘাটতিকে পূর্ণ করে ত্বকের কোষগুলোকে পুনর্জীবিত করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। জিনসেং এর চা ত্বককে গ্লোয়ি এবং হাইড্রেট করে।
বর্তমানে জিনসেংয়ের নির্যাস থেকে বিভিন্ন ধরনের সিরাম, ক্রীম, ফেসওয়াশসহ সৌন্দর্য চর্চার বিভিন্ন উপকরণ তৈরি হচ্ছে। কারণ জিনসেংয়ে থাকা উপাদান ত্বকের কোলাজেন উৎপন্ন করে, ত্বকের ইলাস্টিটি বৃদ্ধি করে ত্বককে আরও মসৃণ এবং তারুণ্যদ্দীপ্ত করে তোলে। এর প্রাকৃতিক নির্যাস ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, ত্বকের কালো দাগ, ত্বকের অসমান টোনকে সমান করে এবং ত্বকের পুষ্টি জুগিয়ে ত্বককে হাইড্রেট করে।
এছাড়া অ্যারোমাথেরাপীর জন্য জিনসেং অত্যন্ত কার্যকরী।
শুধু ত্বকই নয়, চুলের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- চুল পড়ে যাওয়া এবং টাক এসবের জন্যও জিনসেং অনেক উপকারী। কারণ জিনসেং-এ প্রাকৃতিক কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায় যা চুলের দেখাশোনার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।