১৯৬০ সালে সিবিসি টিভির শিকাগোর স্টুডিওতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আয়োজন হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের বির্তক। কেনেডি-নিক্সন বিতর্কটির পর মাঝে ১৬ বছর বন্ধ থাকলেও ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে টিভি পর্দার সামনে বিতর্কে বসেন প্রার্থীরা। ভোটারদের সঠিক প্রার্থীকে বেছে নিতেও অনেকটা সহায়ক হিসেবে কাজ করে প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেট।
তবে ২০২০ সালের মতো এবারের ট্রাম্প-বাইডেন ডিবেটের রিম্যাচও ছিলো অসত্য তথ্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ ও কথার ফুলঝুড়িতে ভর্তি। কেউই অপরজনকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি। ট্রাম্পের চেয়ে মাত্র তিন বছরের বড় হলেও কথায় জড়তা ও অস্পষ্টতা অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছে বাইডেনকে। মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর হেডলাইনেও অনেকটাই পরিষ্কার ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেনের ব্যবধান।
এমন হতাশাজনক পারফর্ম্যান্সের পরেও ডেমোক্রেট শিবিরের সমর্থন পাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষতার চেয়ে রিপাবলিকানরা তুলে ধরছেন বাইডেনের অদক্ষতাকে।
ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিওসম বলেন, 'এটা স্টাইলের বিষয় নয়। মার্কিন নাগরিকদের ফলাফল প্রদানের বিষয়। আজ রাতে জো বাইডেন নিজেকে শুধু প্রমাণই করেননি, একইসঙ্গে নিজের কাজ ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচি তুলে ধরেছেন।
ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ম্যাট গেটজ বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র একজন উদ্যমী প্রেসিডেন্টকে চায়। ট্রাম্পের মধ্যে এই দক্ষতা আছে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বয়সের ভারে ন্যুব্জ একজন ব্যক্তি।'
বিতর্কের আগে জনমত জরিপে প্রায় কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। তবে নির্বাচনী প্রচারণাগুলোয় আদালত কর্তৃক স্বীকৃত অপরাধী ডোনাল্ড ট্রাম্প, এই বিষয়টি বারবার তুলে ধরেছেন জো বাইডেন। তাই কট্টর রিপাবলিকান ছাড়া সুইং স্টেটগুলোয় ভোটারদের মন জয়ে ট্রাম্পকে বেগ পেতে হবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জেমস লং বলেন, 'নির্বাচনি ক্যাম্পেইনের শুরু থেকেই বাইডেন একটি আখ্যান তৈরি করেছেন। যেটি হলো এই ভোটের মূল উদ্দেশ্য গণতন্ত্র। তিনি একজন দণ্ডিত অপরাধীর বিরুদ্ধে লড়ছেন। আপনারা বাইডেনকে পছন্দ না করতে পারেন, কিন্তু তার প্রতিপক্ষ আরও বাজে। আমার মতে আজকে ট্রাম্প কারও মত পরিবর্তন করতে পারেননি।'
তবে দর্শক থেকে শুরু করে রাজনীতি বিশ্লেষক সবাই এক বিষয়ে একমত, প্রথম বিতর্কে পরিষ্কারভাবে কেউ জয় না পেলেও হেরেছেন জো বাইডেন।