যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মেক্সিকোসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আগামী বছর।
আসছে বছর জানুয়ারির শুরুতে কথা রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার। ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী প্রচারণা।
২০২৪ সালে শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের প্রায় অর্ধেকের বেশি মানুষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন তাদের জনপ্রতিনিধি। প্রায় ৪ বিলিয়ন মানুষ প্রয়োগ করবেন তাদের ভোটাধিকার। এ নিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সেখানে বলা হয়, জানুয়ারিতে বাংলাদেশের নির্বাচন আর ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গহর আলী খানের নেতৃত্বে 'পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ', সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের 'পাকিস্তান মুসলিম লীগ' ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির 'পাকিস্তান পিপলস পার্টি'। অংশ নিচ্ছেন না দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। যদিও প্রার্থী না হয়েও দলে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে তার।
ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় নির্বাচন। যেখানে এক দিনে ভোট দেবেন ২০ কোটি মনুষ। একই সঙ্গে ভোট দেবেন সাড়ে ১৭ লাখ প্রবাসী ইন্দোনেশিয়ান।
এশিয়ার দেশগুলো ছাড়াও ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতেও ব্যাপক পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে রাজনীতিতে। মার্চে ভোট অনুষ্ঠিত হবে পর্তুগাল ও অস্ট্রিয়ার।
২০২৫ এর জানুয়ারিতে ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। যার কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে ২০২৪ সালেই। এবারের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোটে ১৪ বছর শাসনে থাকা কনজারভেটিভ দলের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারে লেবার পার্টি।
জুনে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ মেক্সিকো ও দক্ষিণ আফ্রিকায়ও।
এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার এসব দেশের নির্বাচনের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে যেসব দেশের নির্বাচন তাদের মধ্যে শুরুতেই রয়েছে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। জানুয়ারির ১৩ তারিখেই তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তাইওয়ানের জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্ধারণ করবে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তাইওয়ানকে কোনদিকে নিয়ে যেতে চায় তারা।
২০২৪ সালেই হতে যাচ্ছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যদিও কোন সন্দেহ নেই যে ক্ষমতাসীন ভ্লাদিমির পুতিনই মসনদের দখলে থাকবেন।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ভারতের নির্বাচনও ২৪ সালের এপ্রিল ও মে মাসে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে গোটা আন্তর্জাতিক মহল। কেননা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, চীন-রাশিয়ার সঙ্গে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সম্পর্কসহ বৈশ্বিক নানা সমীকরণ।
ইউরোপের জন্য জটিল সময় অপেক্ষা করছে আসছে জুনে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বের হওয়ার পর এবারই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশাল এ জোটটিতে। ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা বরাদ্দ, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা, অভিবাসন নীতি, বিপর্যস্ত জলবায়ুর নিয়ন্ত্রণ ও ইউরোপজুড়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা বড় চ্যালেঞ্জ ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য।
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনও আসছে বছরের নভেম্বরের শুরুতে। যেখানে বড় প্রভাব ফেলছে ট্রাম্প ফ্যাক্টর। গণতান্ত্রিক এ দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসেন, তবে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে বিশ্ব রাজনীতিতে।
একবছর পর বিশ্ব কোন দিকে যাবে তাই নির্ধারিত হবে বিশ্বের ৪ বিলিয়ন মানুষের ব্যালট ভোটে। নির্ধারিত হবে জনগণের স্বাধীনতা ও রাজনীতিবদিদের স্বচ্ছতার মানদণ্ড।