আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

চার বছর পর আবারো শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে জাহাজ রপ্তানি

চার বছর পর আবারো শুরু হচ্ছে জাহাজ রপ্তানি। জানুয়ারিতেই 'রায়ান' নামে একটি জাহাজ আমিরাতে পাঠাচ্ছে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড। ২০২৫ সালে আরো চারটি ফেরি, দুটি টাগ বোট, অয়েল ট্যাংকারসহ সাত মিলিয়ন ডলারের ৭টি জাহাজ রপ্তানি করবে এই প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও ফেরি, কার্গো শিপসহ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে জাহাজ নির্মাণের অর্ডার পাচ্ছে ওয়েস্টার্ন মেরিন।

বৈশ্বিক মন্দা ও কোভিডের ধাক্কায় গেল কয়েক বছরে জাহাজ রপ্তানিতে ভাটা পড়ে। আগের দেয়া ক্রয়াদেশ ফিরিয়ে নেয় অনেক ক্রেতা। এতে চরম সংকটে পড়েন দেশীয় জাহাজ নির্মাতারা। ব্যাংকের দায় দেনা, লোকসানে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।

তবে আবারো ফিরছে সুদিন, বিশ্ব অর্থনীতিতে ফিরেছে স্থিতিশীলতা। সেই সঙ্গে কার্বনমুক্ত নিরাপদ নৌ চলাচলের জন্য পুরানো সব জাহাজ স্ক্র্যাপ করতে হচ্ছে জাহাজ মালিকদের। তাই বেড়েছে চাহিদা। দীর্ঘ চার বছর পর আবার রপ্তানি শুরু করেছে শীর্ষ জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিংয়ের সঙ্গে সাথে গেল বছর সাত মিলিয়ন ডলার মূল্যের ৮ টি জাহাজ রপ্তানির চুক্তি করে ওয়েস্টার্ন মেরিন। ইতোমধ্যে রায়ান নামের একটি জাহাজ প্রস্তুত, রপ্তানি হবে জানুয়ারিতে। সাত মিলিয়ন ডলার মূল্যের চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট, দুটি টাগ বোট ও দু'টি অয়েল ট্যাংকার ২০২৫ সালের মধ্যে রপ্তানি করা হবে। মান ভালো ও দাম সাশ্রয়ী হওয়ায় বাংলাদেশি জাহাজের প্রতি ঝুঁকছে জাহাজের ক্রেতারা।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন তারেক এম নাসরুল্লাহ বলেন, ‘ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য সহ অন্যান্য দেশে আমরা ব্যবসা খুঁজতেছি আমরা আশা করি আমরা ব্যবসা পাবো। কারণ আমরা ভালো মানের জাহাজের জন্য অন্যতম একটি কেন্দ্র।’

ইতোমধ্যে ফেরি, কার্গো শিপসহ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে জাহাজ নির্মাণের অর্ডার পাচ্ছে ওয়েস্টার্ন মেরিন। ব্যাংক থেকে স্বল্পসুদে ঋণ পেলে বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় সম্ভব বলে মনে করেন ওয়েস্টার্ন মেরিনের শীর্ষ কর্মকর্তা।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, ‘উচ্চসুদ হারে অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা আমাদের জন্য খুব কঠিন। আমাদের চাওয়া সরকারের কাছে যে সাড়ে চার শতাংশের লোন বিবেচনা করেছিল তা যেন তারা বাস্তবায়ন করেন।’

সাগর দূষণমুক্ত রাখতে আগামীতে চলবে না কোন কার্বন নিঃসরণকারী জাহাজ। কয়েক বছরে স্ক্র্যাপ হবে ১৫ হাজার জাহাজ। তাই বাংলাদেশি জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলে মনে করেন নাবিকরা। এতে শুধু রপ্তানি আয় নয়, বিপুল সংখ্যক দক্ষ কর্মী রপ্তানি হবে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপটেন মো.আনাম বলেন, ‘এই শিল্প একসঙ্গে দুইটা কাজ করে একটা হলো বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে অন্যটি হলো এর মাধ্যমে তৈরি হওয়া টেকনোলজিক্যাল গ্রুপ। এই গ্রুপগুলো আবার বাহিরে রপ্তানি হয়। যেমন সিঙ্গাপুরের ৭৫ শতাংশ জাহাজ নির্মাণকারী শ্রমিক কিন্তু আমাদের এখান থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত।’

২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ মোট ৪৪টি জাহাজ রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে এককভাবে ৩৩ টি জাহাজ রপ্তানি করেছে ওয়েস্টান মেরিন। বিপরীতে রপ্তানি আয় করে ১০০ মিলিয়ন ডলার।

এএম

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর
No Article Found!