দেশে এখন
0

ফরিদপুর নদী বন্দরে নাব্য সংকট চরমে

দক্ষিণবঙ্গসহ বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের ব্যবসায়িক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত সিএন্ডবি ঘাট নৌবন্দর। পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত এই বন্দরটি কয়েক হাজার কুলি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের জীবিকার অন্যতম মাধ্যম। তবে সম্প্রতি পদ্মা নদীতে নাব্য সংকট ও ডুবো চরের সৃষ্টি হওয়ায় বন্দরের স্বাভাবিক কাজ থমকে গেছে।

শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর সিএন্ডবি ঘাটকে ২০১৫ সালে নদীবন্দর ঘোষণা করা হয়। পরে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত হয় বন্দরটি। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর এবং সিলেট, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলার সাথে সরাসরি বাণিজ্যিক সংযোগ স্থাপনের বন্দরটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ থেকে ৫ কোটি টাকার পণ্য আমদানি রপ্তানি হলেও শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় বছরের একটি বড় সময় ধরে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এই সংকট শুধু বন্দরের কর্মী ও ব্যবসায়ীদের জীবনেই প্রভাব ফেলছে না বরং জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফরিদপুরের বিখ্যাত পাট এই বন্দর হয়েই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রপ্তানি হয়। সিলেট থেকে কয়লা ও বালু, নারায়ণগঞ্জ থেকে সিমেন্টবাহী জাহাজ এই বন্দর থেকে খালাস করা হয়।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই নৌবন্দর থেকে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। কিন্তু ডুবো চর ও নদীর নাব্য সংকটের কারণে, চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বাড়ছে না রাজস্ব। তাই, বন্দরের প্রতি সরকারের নজর ফেরানোর দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।

বন্দর সচল রাখতে ও মালামাল ওঠা-নামার সুবিধার জন্য নদী খননের জরুরি উল্লেখ করে বিআইডব্লিউটিএ'র এই কর্মকর্তা বলেন, বন্দরের তিনটি পল্টনেই খননের প্রয়োজনীয়তা আছে, তবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বাড়ানো যাবে।

ফরিদপুর বিআইডব্লিউটির সিএনবি সেকশনের হিল্লুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘ড্রেজিং করা প্রয়োজন, ড্রেজিং করা হলে মালামাল ওঠানামা করতে সুবিধা হবে’

খননের দ্রুত করা সম্ভব না হলে চ্যানেলটি বন্ধের শঙ্কা রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। বলেন, নদী শাসনসহ খনন কাজ নিয়মিত করতে হবে। ডিগ্রীচর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হায়দার আলী খান বলেন, ‘ এ নদীবন্দরটি সচল করতে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বন্দরটি সচল হলে হাজারো মানুষের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গে ব্যবসার উন্নতি হবে।’

ফরিদপুর নদী বন্দর পোর্ট অফিসার মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা চিঠি দিয়েছি। এখন ড্রেজার পাওয়ার সাপেক্ষে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু হবে।’

যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হলে ফরিদপুর সিএন্ডবি ঘাট দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক হাব হিসেবে ফিরে আসতে পারবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এএম