অর্থনীতি , গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
0

বিনামাস-২ জাতের ডাল চাষে সফলতা

পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আবিষ্কৃত বিনামাস-২ জাতের ডাল আবাদে সফলতা পেয়েছেন মাগুরার চাষিরা। আমন ধান ও চৈতালি ফসলের মধ্যবর্তী স্বল্প সময়ে ভালো ফলন পাওয়ায় নতুনজাতের এই ডাল চাষ করে কৃষকরা বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন। নাইট্রোজেনের অভাব পূরণ করে জমির উর্বর শক্তি বাড়ায় উচ্চফলনশীল এই জাতটি।

বিনামাস-২ বীজে আমিষের পরিমাণ ২২-২৪%। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ১.৫ টন এবং পাতা হলুদ মোজাইক ভাইরাস সহ্য ক্ষমতাসম্পন্ন। বৃষ্টির পানি জমে থাকে না এমন যেকোন জমিতে মাসকলাই এর চাষ করা যায়। তবে বেলে দোআঁশ ও পলি দোআঁশ মাটি, মাঝারি উঁচু এবং সুনিষ্কাশিত জমি মাসকলাই আবাদের জন্য উপযোগী। মাসকলাই চাষের জন্য কৃষকদের বাড়তি চাষেরও প্রয়োজন পড়ে না ।

এক চাষি বলেন, 'আমি ৭ বিঘা জমিতে বিনা মাস-২ চাষ করছি। এতে খুব লাভবানের আশা করতেছি।'

খুব অল্প পরিচর্যা ব্যয়ে চাষযোগ্য বিনা মাসকলাই-২ এ পোকার আক্রমণ তুলনামূলক কম। প্রতি বিঘায় ৮-১২টি গাছের ডাল বা কঞ্চি পুঁতে দিলে পোকাভোজী পাখি এগুলো দমন করতে পারে।

কৃষকরা বলেন, আগে যে ডাল চাষ করতাম তারচেয়ে এখনকার ডাল অনেক উন্নতমানের। আগে ৪ থেকে ৫ মণ করে ডাল হইতো এখন ১০ থেকে ১২ মণ করে ডাল হয়।

মাগুরা জেলায় এ বছর বিনা ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে বিনামাস-২ এর চাষ করা হয়েছে। একাধিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের হাতে-কলমে উদ্বুদ্ধ করেছে বিনা ও কৃষি বিভাগ। ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন এ জাতটি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষকরা।

উচ্চ ফলনশীল ও কম খরচে হওয়ায় লাভজনক এ কৃষিকে আরও ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিনা'র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ। বলেন, 'বিনামাস-২ একটা ডাল জাতীয় ফসল। তাই ডাল জাতীয় ফসলের মাধ্যমে আবাদ করলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। জমি গাছ থেকে নাইট্রোজেন নিতে পারে। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অর্থ দেশেই রাখা সম্ভব।'  

কৃষিকে যত বেশি আধুনিক ও লাভজনক কার্যক্রম হিসেবে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যাবে ততই কৃষিপ্রধান এদেশের কৃষকদের মুখের হাসি দীর্ঘায়িত হবে। প্রকৃত অর্থনৈতিক মুক্তির পথও রচিত হবে।