ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাবল লাইনের ব্রাহ্মণবাড়ির আখাউড়া থেকে ফেনীর ফাজিলপুর এবং লাকসাম রেলওয়ে জংশন থেকে নোয়াখালী ও চাঁদপুর মিলিয়ে রেলওয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের ২৩৫ কিলোমিটার পথে লেভেল ক্রসিংয়ের সংখ্যা তিন শতাধিক। যার মধ্যে ১১৪টি বৈধ। অবৈধ লেভেল ক্রসিংয়ে অসাবধানতায় ঝরছে প্রাণ। গেলো ১৮ মাসে এ অঞ্চলে প্রাণ হারিয়েছেন দেড় শতাধিক।
ক্রসিং নির্মাণের রেলওয়ের আইন মানছেন না কেউই। নিজেদের সুবিধামতো সাধারণের পাশাপাশি মানুষ পারাপারের পথ তৈরি করছে উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানও।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, '১ নম্বর সমস্যাটা হচ্ছে সচেতনতার অভাব। ২ নম্বর সমস্যা হচ্ছে প্রশাসন তাদের এই গেট বন্ধে কোনো দৃষ্টি নাই।'
কুমিল্লা সাবেক রেলওয়ের লোক মাস্টার একে মিয়াজি বলেন, 'রেললাইনে সবসময় ১৪৪ ধারা জারি আছে। কিন্তু এই আইনটা কেউ মানছে না। আর রেললাইনে অসচেতনতার ফলে অনেকে টিকটক, ভিডিও করে যার ফলে দুর্ঘটনার ঘটে।'
কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তফা কামাল বলেন, 'ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাবল রেলপথের আখাউড়া থেকে ফেনীর ফাজিলপুর পর্যন্ত কুমিল্লার ১৩৪ কিলোমিটার লাইনের আপ এবং ডাউনে প্রতিদিন ২০ জোড়া ট্রেন ৮০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে চলাচল করে। এর পরেও কুমিল্লার বিজয়পুরে লাইনের একপাশে বাজার, আরেক পাশে স্কুল। লাইনের উপরে বসে শ্রমিকের হাট।'
একই পথের কুমিল্লার সদর রসূলপুর স্টেশনের ২০০ গজ সামনের অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংটিও অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের গলারকাটা। দুপাশে এলজিইডির সড়ক থেকে ১৫-১৬ ফুট উঁচু রেলপথে উঠেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে বহু যানবাহন।
আরো একজন স্থানীয় বলেন, ‘প্রচণ্ড ভোগান্তি হয় আমাদের। একটা মহিলা ঢাকা থেকে আসছে আমি তাকে আপনাদের সামনে পার করে দিলাম।’
লাকসাম-আখাউড়া ডাবল রেললাইন প্রকল্প ম্যাক্সের এডমিন ইমরান আলী বলেন, 'বিজয়পুরে মাঝে মাঝে দুর্ঘটনা ঘটে। এইজন্য ওই বেরিয়ারটা খুলে সংস্কারের অবস্থায় আছে আমরা ওই দিন শর্ট টাইমে লাগায় দিবো।'
রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলছেন, আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি জনগুরুত্বপূর্ণ অবৈধ ক্রসিংগুলোকে বৈধ করণের প্রক্রিয়া চলছে।
রেলওয়ে কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী পথ লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, 'রসূলপুরের ওই গেট টাকে মেইন গেট করার কথা বলেছি। ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে হয়ে যাবে।'
রেলের গতি বাড়লেও, বাড়েনি নিরাপত্তা। অরক্ষিত ক্রসিং ও নানা অব্যবস্থাপনায় বাড়ছে দুর্ঘটনা। এমন অবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ জনবল ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির তাগিদ সচেতন মহলের।