বাহিনীর অধস্তন কর্মকর্তারা বলছেন, লাভের গুড় খেয়ে সটকে পড়েছেন স্বার্থান্বেষী অফিসাররা। এমনকি ভেঙে গেছে পুলিশের চেইন অব কমান্ড। তাই সাবেক ক্ষমতাসীনদের দোসর কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি এনে নিরপরাধ পুলিশ সদস্যদের বাঁচানোর আকুতি তাদের।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে এভাবেই শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হতে দেখা যায় পুলিশ বাহিনীকে। দেশের আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত এই বাহিনীর গুলিতে হতাহত হয়েছেন অনেকে।
যার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে পুলিশের উপর। থানায় থানায় ভাঙচুর হয়েছে, আগুন দেয়া হয়েছে পুলিশের স্থাপনায়।
এমনকি পুলিশ সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার পরে ফুটওভার ব্রিজে ঝুলিয়ে রাখার ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। থানা ও ব্যারাক ছেড়ে কোন মতে প্রাণ বাঁচিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। আর স্বার্থান্বেশী কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পালিয়েছেন দায়িত্ব ছেড়ে।
আজ (মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স গিয়ে থমথমে চিত্র দেখা গেছে। ব্যারাকের প্রধান ফটকে সশস্ত্র পাহারা দিচ্ছেন সৈনিকেরা। সেখানেই কথা হয় কয়েকজন অধস্তন কর্মকর্তাদের সাথে। ক্যামেরায় চেহারা না দেখানোর শর্তে এখন টিভির সঙ্গে কথা বলেন কয়েকজন।
জানান, বিগত সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রতিপালন করা কিছু উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্য পালিয়েছেন। বিপদে ফেলে রেখে গেছেন কন্সটেবল, সহকারী উপপরিদর্শক, উপপরিদর্শক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের।
এখন জনতার ক্ষোভের শিকার হচ্ছেন তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।
একজন পুলিশ কন্সটেবল বলেন, কিছুদিন আগে আমরা স্টুডেন্ট ছিলাম এখন চাকরি করি। অফিসারদের কারণে আমরাই এখন ঝামেলায় পরে গিয়েছি জনগণের কাছে। অফিসাররা তো গা ঢাকা দিয়েছে।
ব্যক্তিগত লোভ, ক্ষমতাসীনদের সান্নিধ্যে থাকা ও পুলিশের পোশাক পরে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করা কর্মকর্তারা দেশের খারাপ সময়ে সটকে পড়েছেন। অধস্তন সদস্যদের ফেলেছেন বিপদের মুখে। এখন বাহিনীতে চেইন অব কমান্ড নেই বলেও অভিযোগ করেন। তাই ক্ষমতালোভী অফিসারদের বিচারের মুখোমুখি আনার দাবি তাদের।
'পুলিশ জনগণের বন্ধু' এই স্লোগান নিয়ে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম যুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়া এই বাহিনীকে ভুল না বোঝার প্রত্যাশা পুলিশ সদস্যদের। পাশাপাশি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনীকে একই কাতারে রেখে ভবিষ্যতে কাজ করার আহ্বান।