মৌসুমের শেষদিকে ধারাবাহিক বৃষ্টিতে দেশের ১শ' ৬৮টি চা বাগানের গাছগুলো নতুন প্রাণ পেয়েছে। সবুজ, সতেজ পাতা আহরণে শ্রমিকদের ব্যস্ততাও বেড়েছে।
বাগান মালিকরা বলেন, বছরের শুরুতে খরার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চা উৎপাদন কমে যাওয়ায় সবাই উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে গত তিন মাসে সেই চিত্র পাল্টে গেছে। চলতি বছরের জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ৪ কোটি ২৫ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। যা আগের বছরের চেয়ে ৫৭ লাখ কেজি বেশি।
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়েছে। ২০২২ সালে কমে উৎপাদন দাঁড়ায় ৯ কোটি ৩৮ লাখ কেজিতে। আর এ বছরের প্রথম ৯ মাসেই উৎপাদন হয়েছে ৬ কোটি ৯০ লাখ কেজি। এই ধারাবাহিকতায় বছর শেষে ১০ কোটি কেজির বেশি চা পাতা উৎপাদনের মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের চৌধুরী টি কোম্পানির পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি নীতিমালার মাধ্যমে চায়ের দাম নির্ধারণ প্রয়োজন।
রাঙ্গাপানী টি এস্টেটের ম্যানেজার মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, বেশিরভাগ চা পাতার মান ভালো না। এছাড়া সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্রেতারা চা কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন না। আর চায়ের উৎপাদন বাড়লেও দাম তেমন পাওয়া যাচ্ছে না।
দেশে চা উৎপাদনের তথ্য। ছবি: এখন টিভি
উৎপাদনের পাশাপাশি চা রপ্তানিতে গত দুই বছরের রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে ৬৮ হাজার কেজি চা রপ্তানি করে আয় হয়েছিলো ১৮ কোটি টাকা। আর ২০২২ সালে ৭৮ হাজার কেজি রপ্তানি করে আয় দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ বছর প্রথম ৯ মাসেই রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকায়, যেখানে চা রপ্তানি হয়েছে ৮২ হাজার কেজি।
বাংলাদেশ টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল আলম বলেন, চায়ের বিদেশি বাজার ধরতে হলে মান বাড়াতে হবে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।
এদিকে বাগান মালিকদের জন্য নিলামের মূল্য নতুন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাগানের উৎপাদিত চা নিলামে কিনে নেন কারখানার মালিকরা। সেখানে প্রতি কেজি চা পাতার গড় মূল্য ১শ' ৯০ টাকা। অথচ উৎপাদন খরচ ২শ' টাকার বেশি। তবে ভালো মানের চা পাতা ২৫০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।