পরিষেবা
অর্থনীতি
0

চাঁদপুর আধুনিক নৌ-বন্দর নির্মাণ: ১৬ মাস পার হলেও শেষ হয়নি পাইলিং

ধীরগতিতে চলছে চাঁদপুর আধুনিক নৌ-বন্দরের নির্মাণকাজ। দুই বছর মেয়াদি প্রকল্পের ১৬ মাস পার হলেও শেষ হয়নি পাইলিং। এদিকে দীর্ঘসূত্রতায় দুর্ভোগ বাড়ছে এই পথে চলাচলকারীদের। সংশ্লিষ্টরা জানান, নানা জটিলতায় কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।

চাঁদপুর থেকে রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের অন্যতম কেন্দ্র চাঁদপুর নৌবন্দর। এই বন্দরের বর্তমান টার্মিনালে নেই বসার স্থান, টয়লেট কিংবা যাত্রী ছাউনি। যাতে প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হতে হয় এই বন্দর ব্যবহারকারীদের।

২০১৬ সালে একনেক সভায় শহরের মাদ্রাসা রোড এলাকায় মেঘনা নদীর পাড়ে নৌবন্দরটি আধুনিকায়ন প্রকল্পের অনুমোদন হয়। এতে উন্নত সেবা পাওয়ার আশায় বুক বাঁধেন এই পথে চলাচলকারীরা।

একজন যাত্রী বলেন, 'বৃষ্টি হলে ভিজে দাঁড়ানো লাগে। তারপর ওয়াশরুমে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। এগুলো করলে যাত্রীদের জন্য সুবিধা হতো।'

চাঁদপুর বিআইডবিউটিএ'র বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মো. বছির আলী খান বলেন, 'আধুনিক ভবনটা হয়ে গেলে মনে হয় যাত্রীদের আরাম আয়েশ এবং বিআইডবিউটিএ'র সেবা যে জনবান্ধব, যাত্রীবান্ধব এবং জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।'

২৪ মাসের মধ্যে তিনটি চারতলা ভবন নির্মাণ, পন্টুন স্থাপন, গ্যাংওয়ে, পার্কিং ইয়ার্ড, এক্সটার্নাল ব্রিজ ও বন্দরে যাতায়াতের রাস্তা প্রশস্থকরনের কথা থাকলেও ১৬ মাসে সম্পন্ন হয়েছে প্রকল্পের মাত্র ২০ শতাংশ কাজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের উদাসীনতায় এমন অবস্থা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় একজন বলেন, 'দুই বছরের কাজটা দেড় বছর হয়ে যাওয়ার পরও হচ্ছে না। এজন্য আমরা এটার প্রতিবাদ জানাই, নিন্দা জানাই, ক্ষোভ প্রকাশ করছি।'

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে দুই দশমিক দুই একর জমিতে প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৬৭ কোটি টাকা। কয়েক দফা বেড়ে এখন যা ঠেকেছে ৯৩ কোটিতে। এর পরেও ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার অভিযোগ অনেকের।

স্থানীয় একজন বলেন, 'আমাদের সব এভিডেন্স ওকে আছে। আমাদের ফাইল নিয়ে এখন আমাদের সাথের মানুষদের টাকা দিয়ে দিয়েছে কিন্তু আমরা অনেকেই এখনও টাকা পাইনি। আমরা এক নম্বর থেকে সাত নম্বর দোকানদাররা কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। আমাদের দেই, দিতেছি বলে আজ তিন বছর ধরে ঘুরাচ্ছে।'

এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা। আর নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে কাজ শেষ হতে দেরি হচ্ছে বলে বলে দাবি বিআইডাব্লিউটিএর।

বিআইডব্লিউটিএ'র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. আইয়ুব আলী বলেন, 'পাইল করতে গিয়ে দেখা গেছে যে মাটির নিচে ১০ মিটার পর্যন্ত আমরা বোল্ডার পেয়েছি। বড় বড় বোল্ডার যেটা ভেদ করে আর নিচে যাওয়া সম্ভব নয়। তারপর আমরা এটা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের নির্দেশনা তাদের ট্যাকনিক্যাল টিম সাথে বিআইডবিউটিএ'র যে ট্যাকনিক্যাল কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে আমরা পরে নকশা পরিবর্তন করে আমরা ডিজেল হ্যামার দিয়ে পাইলিং কাজ করছি।'

চাঁদপুর লঞ্চ ঘাট প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন রুটে ছোট-বড় মিলিয়ে অর্ধশতাধিক লঞ্চে পাঁচ হাজারের বেশি যাত্রী। তবে বিভিন্ন উৎসবের সময় তা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

এসএস