দেশে ৭৫ বছরের ইতিহাসে তাপপ্রবাহের রেকর্ড গড়েছে ২০২৪ সাল। প্রচণ্ড গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। তাপে ঘামে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ আবার হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এই গরমে একটু প্রশান্তির খোঁজে কেউ খুঁজছেন গাছের শীতল ছায়া আবার কেউ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রে জুড়িয়ে নিচ্ছেন নিজেকে।
তীব্র গরমে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে এমন কিছু খাবার যা শরীরকে ভেতর থেকে ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে। এমনই একটি খাবার হলো দই। শুধু শরীর ঠাণ্ডা নয়, দইয়ের রয়েছে আরও অনেক উপকারিতা।
দই প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ। শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণসহ শরীরের অনেক উপকার করে এটি। দই হজমের সমস্যা দূর করে পেট পরিষ্কার রাখে। পেপটিক আলসার হওয়ার পেছনে দায়ী ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতেও দইয়ের কোনো বিকল্প নেই। দইয়ের সাথে জিরা গুঁড়া, পুদিনা পাতা ও লবণ মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন স্বাস্থ্যকর পানীয়। এছাড়া দই চিড়া, কলা মিশিয়ে খেতে পারেন। গরমে এসব খাবার আপনাকে শারীরিক ও মানসিক আরাম দেবে।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে দই। নিয়মিত দই খেলে খেলে হৃৎপিণ্ডের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা একবারেই কমে যায়।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দইয়ে উপস্থিত কিছু ব্যাকটেরিয়া শরীরের ভেতরে ক্যানসার কোষের জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে। তাই স্বাভাবিকভাবেই ক্যানসারের মতো রোগকেও নিয়ন্ত্রণ করে দই।
দুধের মতো দইয়েও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম। এই দুই উপাদান দাঁত ও হাড়ের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এখন থেকেই নিয়মিত দই খাওয়া শুরু করুন। তাহলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড়ের ব্যথা বা হাড়ক্ষয়জনিত রোগ থেকে উপকার মিলবেই মিলবে।
অতিরিক্ত ওজন নিয়ে যদি চিন্তায় থাকেন তাহলে নিয়মিত এক বাটি করে দই খাওয়া শুরু করুন। ওজন কমাতে দারুণ উপকারী দই। বিশেষত ভুঁড়ি কমাতে দইয়ের কোনো বিকল্প হয় না। নিয়মিত দই খাওয়া শুরু করলে হজমক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে কর্টিজল হরমোনের ক্ষরণও কমে যায়। ফলে ওজন হ্রাসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ত্বকের যত্নেও দারুণ উপকারী দই। নিয়মিত দইয়ের তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে বার্ধক্যের লক্ষণ কমে যায়। দইয়ের মধ্যে রয়েছে বায়োঅ্যাকটিভ পেপটাইড যা একধরণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি বার্ধক্যরোধে সহায়ক। এছাাড়া দইয়ের ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল ত্বকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে।
টক দই ও মিষ্টি দইয়ের পুষ্টিগুণ একই। তবে মিষ্টি দইয়ের চেয়ে টক দই খাওয়া ভালো। কারণ টক দইয়ে চিনি যোগ করে মিষ্টি করা হয়। আর চিনি শরীরের ক্ষতি করে। বিশেষত ডায়াবেটিস ও অতিরিক্ত ওজন যাদের, তাদের জন্য টক দই বেশি উপকারী।