নামছে তাপমাত্রার পারদ। জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় জবুথবু সিরাজগঞ্জের জনজীবন। এ অবস্থায় উষ্ণতা দিতে ব্যস্ততা বেড়েছে কম্বল পল্লীতে।
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের ছালাভরা গ্রামের আব্দুল হালিম ও ফরহাদ রেজা। পড়ালেখার পাশাপাশি তিন বছর আগে কম্বল বিক্রির জন্য খুলেছেনে অনলাইন প্লাটফর্ম। তার আয় থেকে ঘুরে ৩০ শ্রমিকের সংসারের চাকা। এবার অনলাইনের মাধ্যমেই ২ থেকে ৩ কোটি টাকার কম্বল বিক্রির আশা ।
গেল দুই দশকে পোশাক কারখানার পরিত্যক্ত টুকরো কাপড় ও ঝুট দিয়ে কম্বল তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে কাজিপুর সদরসহ চার ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামে। একে কেন্দ্র করে স্থানীয় শিমুলদাইড় বাজার পরিচিতি পেয়েছে কম্বল পল্লী হিসেবে। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে অর্ধ লাখেরও বেশি মানুষের। মাথাপিছু প্রতিদিন তাদের আয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা।
৭৫ টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার চারশ টাকার মধ্যে কম্বল পাওয়া যাচ্ছে এই বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদা ভালো থাকায় এখানকার কম্বল যাচ্ছে ঢাকা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
সিরাজগঞ্জের চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজিপুরের কম্বল খুব সস্তায় বিক্রি হয়। জুট দিয়ে কম্বল তৈরি হয়। আর এখানকার পণ্যের মানও ভালো।’
কাজিপুরের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা এই শিল্পটির প্রসারে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রশাসনের।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান আকরামুল হক বলেন, ‘যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে এ গ্রামে প্রায় ৩০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা পরিষদ থেকে সেলাই মেশিন দেয়া হয়েছে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও যুব মন্ত্রণালয় থেকে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা আমরা করেছি।’
প্রত্যন্ত এলাকায় গড়ে ওঠা দেশের অন্যতম বৃহৎ এই পাইকারি কম্বলের বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে ১৬৬ রকমের কম্বল। প্রতি শীত মৌসুমে আড়াইশ থেকে ৩শ কোটি টাকার কম্বল বিক্রি হয় কাজিপুরের এই কম্বল পল্লীতে।