রাতের আঁধার কাটিয়ে রাজশাহী নগরীকে আলোকিত ও সৌন্দর্য মণ্ডিত করেছে সড়কের এই মুকুটবাতি। যা আঁধার রাখেনি নগরীর সড়কে।
নান্দনিক এসব সড়কবাতি আনা হয় তুর্কিয়ে, চীন ও ইতালি থেকে। সাথে আছে নগরীর ১৮টি পয়েন্টে উঁচু ফ্লাডলাইট। তবে সড়ক আর সড়ক দ্বীপের লাইটের সাথে ফ্লাডলাইটে আলোর আধিক্যে হয়েছে বিদ্যুৎ অপচয়। আলোক ঝলকানিতে শহরকে সাজাতে বিদ্যুৎ ব্যয়ের হিসাব বেমালুম ভুলে গিয়েছিল নগর কর্তৃপক্ষ।
নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা-বন্ধগেট, তালাইমারি-কোর্ট, তালাইমারি-কাঁটাখালি পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার পথে আছে আধুনিক এসব সড়ক বাতি। আলোর তীব্রতা বিশ্লেষণ করে প্রায় ১৫ মিটার দূরত্বে বসানো হয় এসব বাতি। তাতেই করপোরেশনের কাঁধে চেপেছে প্রায় ৪২ কোটি টাকার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল। যা আদায়ে বারবার নোটিশও দিয়েছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই (নেসকো) কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
তবে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী বলছেন, শুধুই সড়ক বাতি নয়, এই বকেয়া নগরের চারটি জোনের পানির পাম্প, বিভিন্ন স্থাপনা, আরবান হেলথ কেয়ারে ব্যবহৃত বিদ্যুতের। রাজধানীর সিটি কর্পোরেশন বলছে- যা পরিশোধ হয়নি সাবেক মেয়রের উদাসীনতায়। তবে বর্তমানে বিদ্যুৎ এর অপচয় কমিয়ে ধীরে ধীরে বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ.বি.এম শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিমাসের বকেয়া ক্রমে পুঞ্জিভূত হতে হতে হতে একটা বিরাট অঙ্কে এসে দাঁড়িয়েছে। এক সাথে এতগুলো টাকা দেয়ার সামর্থ্য করপোরেশনের নেই। সে কারণে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ টাকা করে দিতে থাকবো।’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ড. মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘চুলচেরা বিশ্লেষণ করতেছি। যেখানে যেখানে প্রয়োজন নাই সেখানে ঠিক করবো। বাতির বিষয়ে যেমন অভিযোগ এসেছে, কিছু নষ্ট আছে, জ্বলছে না, সেরকম থাকবে না।’
তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু প্রকল্পে আগে কাজ দেয়া হয়েছে পরে টেন্ডার করা হয়েছে। এগুলোও পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। আমি প্রথমেই নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। টেন্ডার ছাড়া যেসব কাজ হয়েছে সেগুলোর একটারও বিল হবে না।’
এদিকে, সৌন্দর্য বর্ধনে সড়কবাতির গুরুত্ব রয়েছে জানিয়ে অপচয় রোধে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের।
১০৩ কোটি ৭ লাখ টাকার নান্দনিক বাতির অনেকগুলোই নষ্ট হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের আগে। তাই জরুরি ভিত্তিতে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে বলছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।