কীর্তনখোলা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। এটি বরিশাল নগরীর সবচেয়ে বড় পাইকারি মাছের বাজার। প্রতিদিন ভোর থেকে মাছ কেনাবেচায় ব্যস্ত থাকে বাজারটি। পাইকারির পাশাপাশি খুচরা মাছও বিক্রি করা হয় এখানে।
বেচে থাকার তাগিদে মানুষ নানা ধরণের পেশা বেছে নেয়। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা কিংবা সরকারি বেসরকারি চাকরির আড়ালে রয়েছে একটি পেশা যার নাম ‘মাছ কাটা’। বরিশালের বাজারগুলোয় দেখা যাবে এই পেশাজীবীদের।
শ্যামল চন্দ্র দাস মাছ কাটা পেশায় অনেকটাই পুরানো। বাবার কাছ থেকেই তার হাতেখড়ি। প্রায় ৩০ বছর ধরে আছেন এ পেশায়। শুধু খুচরা ক্রেতাই নন, তার কাছ থেকে মাছ কাটিয়ে নেন বিভিন্ন ছাত্রাবাস, হোটেল কর্তৃপক্ষও।
শ্যামল চন্দ্র বলেন, 'বাজারে মাছ একটু বেশি হলে আমাদের পক্ষে কাজকর্ম করতে সুবিধা হয়।'
দৈনিক আয় প্রসঙ্গে আরেকজন বলেন, '৫০০ থেকে ৮০০ আবার কোনো দিন দুইশ’ টাকাও পায়।'
অন্যান্য আরো কয়েকজন কর্মী জানান, এ পেশায় আয় অনেকটাই নির্ভর করে মাছ বেচাকেনার ওপর। বড় মাছ প্রতি কেজি ১০ টাকা এবং ছোট মাছ প্রতি কেজি কাটতে গুণতে হয় ৪০ টাকা। পুরুষদের পাশাপাশি বাজারগুলোয় মাছ কাটছেন নারীরাও। তবে বেশিরভাগ বাজারে এই পেশার মানুষদের বসার নির্ধারিত স্থান না থাকায় পড়তে হয় সমস্যায়।
নারীরা বলেন, 'সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা আর বিকাল ৪টা হতে রাত ১টা পর্যন্ত মাছ কাটতে হয়। বসার কোনো জায়গা না থাকায় আমাদের অসুবিধা হয়। যদি বসার জায়গা হতো তাহলে বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করতে হতো না।'
বরিশালের মৎস্য ঘাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি দপ্তর সম্পাদক বাদল হাওলাদার বলেন, 'তাদের মাছ কাটার জায়গা কীভাবে করা যায়, তার চেষ্টায় আমরা আছি।'
শহরতলীর বেশিরভাগ বাসিন্দাই বাজার থেকেই মাছ কেটে বাসায় নেন। এতে ঝামেলা ও সময় দুটোই কম বলেও জানান তারা।
ক্রেতারা বলেন, 'সময় স্বল্পতা কম হওয়ায় আর ঝামেলা কমের কারণে বাজার থেকে মাছ কেটে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।'
বরিশাল নগরী জুড়ে রয়েছে ছোট-বড় অনেক হাট বাজার। ৩-৪ জন দিয়ে শুরু হলেও এখন বাজারগুলোয় মাছ কাটানিদের সংখ্যা দুই শতাধিক।