দেশের ব্যাংকিং খাতে চলতি হিসাব বছরের অর্ধবার্ষিক শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। অন্যদিকে ২০২২ এবং সবশেষ তথ্য মিলে ঋণ পুনঃতফসিল মামলায় আটকানো এবং অবলোপনসহ এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
অথচ এসব ঋণের বিপরীতে যে প্রভিশন রাখা দরকার তা পূরণ হয়নি। আলোচ্য সময়ে প্রভিশন রাখার কথা ছিল প্রায় ৯৯ হাজার কোটি টাকা। আর রাখা হয়েছে ৭৯ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে ঘাটতি রয়েছে ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি।
এদিকে ডলার সংকটে ও চাহিদার কারণে কমছে রিজার্ভ এবং বাড়ছে দাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট রিজার্ভ রয়েছে ২৯.৯০ বিলিয়ন এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্ত বিপিএম-৬ অনুযায়ী ১৮.৪২ বিলিয়ন ডলার। সেই সঙ্গে সবশেষ ৭ টাকা বেড়ে ডলার মূল্য হয়েছে ১১৭ টাকা।
অপরদিকে ব্যাংকিং খাতকে দুরাবস্থা থেকে ফেরাতে চলতি বছরের শুরুতে ব্যাংক একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে প্রথমে দু'একটি ব্যাংক স্বেচ্ছায় আগ্রহ দেখান। পরে এই সিদ্ধান্ত থেকে মূখ ফিরিয়ে নেন কয়েকটি ব্যাংক। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্যাংকিং খাতের শোচনীয় অবস্থা, এই খাতে নেয়া নীতি সিদ্ধান্ত এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে আলোচনা বসেন বিশ্লেষকরা। যেখানে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আলোচকরা। সেই সঙ্গে সমস্যা সমাধানে নানা পরামর্শও দেন তারা।
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণসহ যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করেছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি করে ঋণ খেলাপি কিনে নিয়ে সেটাকে কম দেখানোকে ভোকাস বললেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
গ্রাম থেকে শহর, সব মানুষ ব্যাংক খাত নিয়ে চিন্তিত। সেই সঙ্গে অফশোর ব্যাংকিং, সুকুক, মুদারা বা এ ধরনের বিষয় সাধারণ মানুষের মনে ধোঁয়াশা তৈরি করে বলে জানান সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী।
এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক সমবায় সমিতি হয়েছে বলে জানান সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বিশ্লেষকরা বলেন, ব্যাংকগুলো যখনই সমস্যায় পড়ে তখনই সহায়তা দেয়া হয়। যা বন্ধ করা প্রয়োজন। না হলে ব্যাংক কখনও নিজ ইচ্ছায় ঠিক হবে না বলে জানান তারা।