ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে দাবি করে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) পাকিস্তানের কয়েকটি ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় শিশুসহ সাধারণ মানুষের। ক্ষুদ্ধ হয়ে ইসলামাবাদ জানায়, 'সন্ত্রাসী এই কর্মকাণ্ডের ফল ভোগ করতে হবে ইরানকে ।' এর ঠিক দুইদিন পর ইরানে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।
আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তে ইরানের সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের একটি গ্রামে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করে ইসলামাবাদ। ইরানের দাবি, এই হামলায় ৭ জন বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তবে তারা ইরানের নাগরিক নন। যদিও পাকিস্তান সরকার বলছে, 'মার্গ বার সারমাচার' অপারেশনের মধ্যদিয়ে তারা সন্ত্রাসীদের হত্যা করেছে। এ ঘটনায় বহিস্কার করা হয়েছে পাকিস্তানে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে।
এর আগেই ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয় পাকিস্তানের। ইরানকে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে অনেক আগে থেকেই দাবি করে আসছে পাকিস্তান। যদিও বরাবরই তেহরানের দাবি, সীমান্তের বেলুচিস্তান প্রদেশে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীদের মদদ দিয়ে রেখেছে ইসলামাবাদ। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, পাকিস্তানকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হলেও তা আমলে নেয়নি তারা।
মঙ্গলবার পাকিস্তানে 'জাইশ আল আদল' সশস্ত্র গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালায় ইরান। পাকিস্তানের ক্ষোভ, সমঝোতার সম্পর্ক থাকলেও যোগাযোগের সব মাধ্যম উপেক্ষা করে সরাসরি ভূখন্ডেই হামলা করে বসেছে ইরান।
এদিকে, এক বিবৃতিতে ইসলামাবাদ জানায়, তেহরান গেলো কয়েক বছর ধরেই পাক সন্ত্রাসীদের যেন স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। ইরান এই ইস্যুতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তেহরানের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে ইসলামাবাদ, তবে নিজেদের নিরাপত্তা সবার আগে।
এর আগে ইরাক আর সিরিয়ায় বিভিন্ন ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইরান সীমান্তের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করছে, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে অস্থিরতা তৈরি করছে। ইরান আর পাকিস্তানকে সরাসরি সংঘাতে না জড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে চীন।
এই ঘটনার পর দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সংলগ্ন সীমান্তে সামরিক মহড়া চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইরান। দেশটির ৪০০ কিলোমিটার এলাকাসহ মোট ৬০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলবে এই মহড়া।