যুদ্ধ , মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু
হুতিদের ঠেকাতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাশ

ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে দুই দিনব্যাপী মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু হয়েছে। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করছে ইসরাইল। দেশটি বলছে, গাজা থেকে হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনাই ইসরাইলের একমাত্র লক্ষ্য।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, 'ইসরাইলের লক্ষ্য হামাস নির্মূল। আবারও পরিষ্কার করে বলছি গাজা উপত্যকা স্থায়ীভাবে দখলের কোন ইচ্ছা বা লক্ষ্য ইসরাইলের নেই। ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনের জনগণের সঙ্গে নয়, হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আন্তর্জাতিক আইন মেনে এই যুদ্ধ পরিচালনা করা হচ্ছে। হামাস নির্মূল হলেই গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের সরিয়ে নেয়া হবে।'

নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। আজ ও কাল দুইদিনের শুনানির জন্য শীর্ষ আইনজীবীদের হেগে পাঠিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জরুরিভিত্তিতে গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার ও হামলা বন্ধে বিশেষ অনুরোধ জানাবে তারা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে এ নিয়ে রুল আশা করছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মামলার নিষ্পত্তি হতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। ইসরাইল যদি গণহত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন হারাবে, কূটনৈতিকভাবে কোণঠাসা হবে তারা। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরাইলের মিত্রদেশগুলো যুদ্ধের পক্ষে সমর্থন জোগাতে পারবে না।

গত ২৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালত বা আইসিজেতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। মামলার আবেদনে বলা হয় ইসরাইল ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ গণহত্যা কনভেনশন আইন ভেঙে গাজায় হামলা চালাচ্ছে। ৮৪ পৃষ্ঠার আবেদনে গাজায় জরুরি খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, জ্বালানি, আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দিতে ইসরাইলের ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়।

এদিকে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুতিদের হামলা বন্ধের দাবিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তোলা এই প্রস্তাবে ১১টি দেশ পক্ষে ভোট দেয়। ভেটো ক্ষমতাধর রাশিয়া ও চীনসহ ৪টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। তবে খসড়া প্রস্তাবে রাশিয়ার আনা তিনটি সংশোধনী বাতিল হয়ে যায়।

জাতিসংঘের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় হুতি গোষ্ঠী জানিয়েছে, তারা বৈধ প্রতিরক্ষা কাঠামোর মধ্যেই সব করছে। প্রস্তাবটিকে রাজনৈতিক খেলা হিসেবে দেখছে ইয়েমেনের এই সশস্ত্র গোষ্ঠী। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্‌বান জানায় তারা।

প্রস্তাবে সমুদ্র পথের নিরাপত্তায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানায় জাতিসংঘ। মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশেষ টাস্কফোর্সের আওতায় কাজ করবে সবাই।

জাতিসংঘে জাপানের রাষ্ট্রদূত কাজুইউকি ইয়ামাজাকি বলেন, 'লোহিত সাগরে হুতিদের আক্রমণ ঠেকাতে প্রস্তাবটি শক্তিশালী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে হুতিদের দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ মোকাবিলা করা সহজ হবে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সমুদ্রপথে নৌ চলাচলের অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিকভাবে সহযোগিতা করতে উৎসাহিত করবে।'

এভিএস