৬৫ দিনের দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার কারণে হাতে অখণ্ড অবসর। তাই কেউ বুনতে শুরু করেছেন নতুন জাল আবার কেউ মেরামত করছে পুরানো জাল। আবার কেউ সারিয়ে নিচ্ছেন জীবিকার বাহন পুরাতন ট্রলার।
তবে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বন্ধ হচ্ছে উপার্জন। তাই দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে তাদের। জেলায় নিবন্ধিত ৪৬ হাজার ২১৩ জন থাকলেও ২৭ হাজার ২৫০ জন জেলেকে আনা হয়েছে প্রণোদনার আওতায়। তবে তাদের অভিযোগ প্রণোদনার চাল পর্যাপ্ত নয়।
জেলেদের একজন বলেন, 'আমাদের যে চাল দিচ্ছে তাতে আমাদের হচ্ছে না। যেখানে ৮০ কেজি চাল দেয়ার কথা সেখানে পাচ্ছি ৫০ কেজি, ৩৫ কেজি চাল।'
বরগুনা জেলা মৎসজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, 'সরকার মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমি বিশ্বাস করি জেলেরা সাগরে যাবে না তবে প্রশাসন ঢিলা দিলে জেলেরা সাগরে যাবে। আটকানো যাবে না।'
নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় মধ্যরাতের আগেই সমুদ্র থেকে কূলে ফিরেছে কক্সবাজারের প্রায় ৫ হাজার ট্রলার। শহরের বাঁকখালী নদীতে নোঙর করে রাখা হয়েছে শত শত ট্রলার।
সাগরে যখনই ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে তখনই নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় কিছুটা হতাশ এ অঞ্চলের জেলেরা।
জেলেদের আরেকজন বলেন, 'এমন সময় ইলিশের দেখা পাচ্ছি অনেক কিন্তু সেসময় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার।'
এদিকে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে সমুদ্রে অভিযান শুরু করেছে মৎস্য বিভাগ। এরইমধ্যে একটি ট্রলারকে জরিমানা করা হয়েছে এবং জব্দ করা হয়েছে জাল।
সাগরে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে মাছের বাজারে। সরবরাহ কম থাকায় বরিশালে বাজারে বেড়েছে ইলিশের দাম। দেড় কেজি ওজনের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দেড় লাখ টাকায়। আর এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০ হাজার থেকে লাখ টাকা। সাথে বেড়েছে অন্য প্রায় সব ধরনের মাছের দামও।
দেশের অন্যতম বড় পাইকারি ইলিশের বাজার চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাট। গেল কয়েক বছর যাবত স্থানীয় পদ্মা-মেঘনায় কাঙ্খিত মাছ না পাওয়ায় সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চলের জেলার ইলিশের উপর নির্ভর করে বাজারটি। ফলে নিষেধাজ্ঞা কারণে বিপাকে মাছ ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতাদের একজন বলেন, 'আমাদের মধ্যবিত্তদের জন্য মাছ কেনা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সব মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।'
বিক্রেতাদের একজন বলেন, 'বর্তমানে অভিযান থাকার কারণে মাছের দাম বেড়ে যাচ্ছে।'
উপকূলীয় ১৯ জেলাসহ সারাদেশে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৮ লাখের বেশি। এর বাইরেও কয়েক লাখ জেলে সরাসরি মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে।