বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গুমের ঘটনা তদন্তে ২৭ আগস্ট কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে গুমের ঘটনা কমিশনের তদন্তের জন্য বিবেচনায় আনা যাবে। এরপরই বের হতে থাকে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। এছাড়াও বিভিন্ন পরিবার গুমের তথ্য চেয়ে গুম কমিশনে অভিযোগপত্র জমা দিতে থাকে। সেই সংখ্যা এক হাজার ৬০০’র বেশি।
অভিযোগ জমার পর থেকেই গুমের আলামত ও গুমের স্থানগুলো পরিদর্শন করতে থাকে গুম কমিশন। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৬০০ অভিযোগের মধ্যে ৪০০ জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখেছেন তারা। এর মাঝে ১৪০ জনের সাথে কথা বলেছে গুম কমিশন। সকালে সংবাদ সম্মেলনে গুম কমিশনের প্রধান জানান, বিগত সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যক্তি স্বার্থে ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করেছে। এছাড়াও প্রতিটি বাহিনীকে সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। যারা সরকারের সমালোচক ছিল তাদেরকেও গুম ও টর্চার করা হতো বলে উঠে এসেছে তাদের পরিদর্শনে।
গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি সভাপতি বিচারপতি (অব:) মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পুলিশ আসামিদের কীভাবে অ্যারেস্ট করবে, তার ডিটেলস গাইড লাইন আছে। সেটা কিন্তু ফলো করা হয়নি। আইজিপি দেশের বাইরে আছেন, তিনি দেশে এলে কমিশনে নিয়ে আসব। একটা সার্কুলার দেওয়ার জন্য বলব। তাহলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে, ভোগান্তি হবে না। গুমের সঙ্গে কারা সংশ্লিষ্ট সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে এখন পর্যন্ত ডিজিএফআই, র্যাব, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছে কমিশন। এর মধ্যে র্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি ১৭২টি। এছাড়া সিটিটিসি ৩৭, ডিবি ৫৫, ডিজিএফআই ২৬, পুলিশের বিরুদ্ধে ২৫টি অভিযোগ পেয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, ঢাকার মধ্যে র্যাবের তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু টর্চার সেল দেখেছে গুম কমিশন যা খুব ভয়ংকর।
গুম কমিশন থেকে জানানো হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকেই গুমের বিভিন্ন জায়গার আলামত ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তাই তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে এসব জায়গা ধ্বংস না করারও আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে রাজনৈতিক, জঙ্গি, ব্যবসায়িক ও পারিবারিক কারণে গুম করা হতো বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। গুমের অনেকগুলোর বন্দিশালার মধ্যে ৮ টি জায়গা চিহ্নিত করেছে গুম কমিশন।