কার্বন নিঃসরণ কমাতে দেয়া কথা রাখতে পারছে না শিল্পোন্নত দেশগুলো। আর এ কারণে বেড়েই চলছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা, যা চলতি মাসেই ভেঙ্গেছে ১২৩ বছরের রেকর্ড। এমন অস্বাভাবিক তাপমাত্রার কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে ইতিহাসের অন্যতম উষ্ণতম বছরে পরিণত হতে পারে ২০২৩ সাল।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গলে যাচ্ছে হিমবাহগুলো। ৩৭ বছর পর ভেসে গেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমবাহ এ-টোয়েন্টি থ্রি-এ। নিউইয়র্ক শহরের চেয়ে তিনগুণ বড় হিমবাহটির আয়তন প্রায় ৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার। ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার উপকূল থেকে আলাদা হয়ে যায় এ-টোয়েন্টি থ্রি। পরবর্তীতে ওয়েডেল সাগরে অ্যান্টার্কটিকা উপকূলে এসে জোড়া লাগে। তবে ২০২০ সাল থেকেই হিমবাহটির মধ্যে পরিবর্তন খেয়াল করছিলেন বিজ্ঞানীরা।
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে বিজ্ঞানী ড. অলিভার মার্শ বলেন, ১৯৮০ এর দশক থেকে হিমবাহটি এখানে ছিলো। তবে ২০২০ সালে আমরা প্রথমবারের মতো হিমবাহটিতে হালকা পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলাম। এখন এটি অ্যান্টার্কটিকের পূর্বদিকে দ্রুতগতিতে ভেসে যাচ্ছে।
দিনে ৫ কিলোমিটার গতিতে অ্যান্টার্কটিকের পূর্বদিকে ভেসে যাচ্ছে হিমবাহটি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিনিয়তই উষ্ণতা বাড়ায় ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে হিমবাহটির পুরুত্ব। তাই মহাসাগরের তলদেশের সঙ্গে সম্পর্ক হারিয়ে ফেলে হিমবাহটি। বিজ্ঞানীদের ধারণা দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপ হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে এগুতে পারে এ-টোয়েন্টি থ্রি-এ। এতে করে বন্ধ হয়ে যেতে পারে জাহাজ চলাচল।
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে বিজ্ঞানী ড. অলিভার মার্শ বলেন, হিমবাহটির অনেকদিন ভেসে থাকার ক্ষমতা আছে। তবে সাগরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় এটি দ্রুতই গলতে শুরু করবে। দক্ষিণ আফ্রিকার পথে হিমবাহটি চলে গেলে বাধাগ্রস্ত হবে জাহাজ চলাচল ব্যবস্থা।
শুধু জাহাজ চলাচলই না, হিমবাহটির কারণে বিপন্ন হতে পারে দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপে বাস করা পেঙ্গুইনসহ লাখো সামুদ্রিক প্রাণীর খাদ্য-শৃঙ্খল। অন্যদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে-বাড়বে লবণাক্ততা।