দেশে এখন
0

নাটোরে বস্তায় আদা চাষে বড় সম্ভাবনা

প্রথমবারের মতো বস্তায় আদা চাষে সম্ভাবনার ঝলক দেখাচ্ছে উত্তরের জেলা নাটোরে। ছায়াযুক্ত স্থানে চাষ হওয়ায় ফল বাগানের ভেতরেই অনেকে চাষ করছেন আদা। তবে ফল সংগ্রহের পর অলস পড়ে থাকা বাগানগুলোতে চাষ করা সম্ভব হলে আদা চাষে সক্ষম হতে পারে বাংলাদেশ। এতে শূন্যে কোটায় নামবে আমদানি নির্ভরতা।

দেশে মসলা এবং ঔষধি গুণাগুণ সমৃদ্ধ আদার চাহিদা রয়েছে অন্তত তিন লাখ টনের বেশি। কিন্তু বছরজুড়ে চাহিদা পূরণে মসলা জাতীয় এ পণ্যেটির আমদানি করতে হয় অন্তত ৪০ থেকে ৪৫শতাংশ। যা টাকার অংকে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকা।

তবে দেরিতে হলেও আমদানি নির্ভরতা কমাতে প্রথমবারের মতো সমতল ভূমিতে আদা চাষের ওপর জোর দিয়েছে কৃষি বিভাগ। এরই অংশ হিসেবে সারা দেশের মতো নাটোরের সিংড়ার প্রত্যন্ত ক্ষীরপোতা গ্রামে প্রথমবারের মতো বরই বাগানের ভিতর বস্তায় আদা চাষ শুরু করছেন যুবক রাজীব হোসেন। তার ১০শতাংশ বরই বাগানের ভিতর অন্তত ১হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন তিনি। প্রতিবস্তায় এক কেজি করে হলেও উৎপাদন হবে অন্তত ১ টন আদা। এতে বর্তমান মূল্যে অনুযায়ী লাভের আশা করছেন তিনি।

আদা চাষী রাজীব হোসেন বলেন, 'দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার আদা বিক্রি করতে পারবো। খরচ হয়েছে আমার ৫৫ হাজার ।'

এলাকাবাসীদের মধ্যে একজন জানান, একই বাগানে সে বাড়তি ফসল পাচ্ছে। আর বাড়তি ফসল হিসেবে ২ লাখ টাকা ইনকাম করছে।

আধো আলো, আধো ছায়াযুক্ত স্থানে সবচেয়ে ভাল হয় আদা চাষ। সে দিক থেকে আম, লিচু,পেয়ারা সহ বিভিন্ন বাগান হতে পারে উপযুক্ত স্থান। এক্ষেত্রে জেলায় ফলের বাগান রয়েছে অন্তত ১০ হাজার ৪৭০ হেক্টর। বাগানের পতিত এসব জমি ফেলে না রেখে, আদা চাষ করা হলে শুধু নাটোর থেকেই অন্তত দুই লাখ টনের বেশি আদা উৎপাদন সম্ভব। এতে করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শূন্যে কোটায় চলে আসবে আমদানি।

নাটোর সিংড়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ উদ্দিন বলেন, 'আমরা এবার সরকারি মসলা প্রকল্পের আওতায় বস্তায় আদা চাষের একটা প্রচলন শুরু করছি। সিংড়া উপজেলায় এ বছর আমরা ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছি। এটা ট্রায়েল হিসেবে আমরা করছি। যদি আমরা সফল হয় তাহলে আমরা পরের বছর সেটা ৫০ হাজার বস্তায় উন্নতি করা।'

২০২২-২৩ মৌসুমে দেশে আদা উৎপাদন হয়েছিল ১লাখ ৯২হাজার টন। এই বছর নাটোর জেলায় এবার আদা চাষ হয়েছে ১৪ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ২৭ টন হলে প্রথমবারের মতো জেলায় আদা উৎপাদন হবে অন্তত ৩২৭ টন।

এফশি

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর