ভারতে গাড়ি বিস্ফোরণ: বাবরি মসজিদে হামলার প্রতিশোধে ছক কষছিলো সন্ত্রাসীরা!

গাড়িতে থাকা সম্ভাব্য বোমা হামলাকারী | ছবি: সংগৃহীত
0

লাল কেল্লার সামনে গাড়ি বিস্ফোরণকে সন্ত্রাসী হামলা বলে নিশ্চিত করলো ভারত। ডিএনএ টেস্টের পর হামলায় ব্যবহৃত গাড়িতে প্রধান সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী উমর উন নবী ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা। এদিকে তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূলত বাবরি মসজিদে হামলার প্রতিশোধ নিতেই ছক কষছিলো সন্ত্রাসীরা। এ লক্ষ্যে ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর ছয়টি স্থানে ছয় ধাপে হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আর সেজন্য ৩২টি গাড়িতে করে বিস্ফোরক পরিবহন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো সন্ত্রাসীরা।

বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার প্রতিশোধ হিসেবে আগামী ৬ ডিসেম্বর দিল্লির ছয়টি স্থানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিলো দিল্লির লাল কেল্লায় হামলা চালানো সন্দেহভাজন হামলাকারীদের। ১৯৯২ সালের এ দিনেই ভেঙে ফেলা হয় ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় অবস্থিত বাবরি মসজিদ। পুলিশ বলছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীরা পাকিস্তানের নিষিদ্ধ গোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদ এবং আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামপন্থী দল গাজওয়াত উল হিন্দের সঙ্গে মিলে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। মোট পাঁচ ধাপে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নীল নকশা তৈরি করেছিল তারা।

এদিকে প্রথমবারের মতো বিস্ফোরণের ঘটনাটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে নিশ্চিত করেছে ভারত সরকার। স্থানীয় সময় গতকাল (বুধবার, ১২ নভেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসবভনে বৈঠকে বসে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা। এসময় বিস্ফোরণের ঘটনাটি দেশবিরোধী শক্তি পরিচালিত বলেও জানান তারা।

আরও পড়ুন:

বিস্ফোরণ ঘটাতে ব্যবহৃত গাড়িটিতে প্রধান সন্দেহভাজন হামলাকারী উমর উন নবীর ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাড়ি থেকে পাওয়া দাঁত ও হাড়ের ডিএনএ টেস্টের পর এ তথ্য জানান তারা। নিরাপত্তা সূত্রগুলো বলছে, হামলার জন্য সন্ত্রাসীরা হুন্দাই আই টোয়েন্টি, রেড ইকোস্পোর্টস এবং একটি ব্রেঞ্জা কার গাড়ি কিনেছিল। যার সবগুলোই উমর বিন নবীর নামে নিবন্ধিত।

এর মধ্যে হুন্দাই আই টোয়েন্টি গাড়িটি বিস্ফোরণের পর রেড ইকোস্পোর্টস কারের সন্ধান পাওয়া গেলেও এখনও খোঁজ চলছে ব্রেঞ্জা গাড়িটির। বাকি গাড়িটিতেও বিস্ফোরক থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। দিল্লির পাশাপাশি উত্তর প্রদেশের অযোধ্য শহর ও ২৫ নভেম্বর রাম মন্দিরে পতাকা উত্তোলনের অনুষ্ঠানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিলো বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

লাল কেল্লার কাছে বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে হরিয়ানার ফরিদাবাদে দুটি আবাসিক ভবন থেকে প্রায় তিন হাজার কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় হোয়াইট-কলার সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে জড়িত ডা. মুজাম্মিল শাকিলকে।

শ্রীনগরে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদের পোস্টার লাগানোর জন্য গ্রেপ্তার করা হয় আরেক ডাক্তার আদিল রাঠোরকে। একের পর এক সঙ্গীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে লাল কেল্লার কাছে বিস্ফোরণ ঘটান উমর। বিস্ফোরণের সঙ্গে শাকিল ও রাঠোর উভয়েরই যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

এসএস