এখন ভোট
রাজনীতি
0

সংসদ নির্বাচনে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ

এম সুজন আকন

দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ সরকারের শীর্ষ অনেক পদের নেত্বত্বই এখন নারীদের হাতে।

দেশের অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে দিনের পর দিন। তবে অগ্রযাত্রার এই পথ মসৃণ ছিলো না কখনই। তবে, তাকে সামনে থেকে এগিয়ে নিয়ে যান রাজনীতিতে অংশ নেয়া নারীরা।

দেশের জাতীয় নির্বাচনেও দৃশ্যমান এই অগ্রযাত্রা। সংরক্ষিত আসনের বাইরে এখন সরাসরি মাঠের লড়াইয়ে উঠে আসছেন তারা। ১৯৭৯ সালে দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সময়ের ব্যবধানে যা বেড়েছে সব সংসদ নির্বাচনেই। আর এই যাত্রায় বরাবরই সামনের সারিতে আওয়ামী লীগ।

১৯৮৬ সালের নির্বাচনে ৫ জন, ১৯৮৮ সালে ৪ জন, ১৯৯১ সালে নির্বাচনে সরাসরি ৩৯ জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৯১ সালে জয় পান ৫ জন। ১৯৯৬ সালে ৩৮ জন থেকে ৮ জন, ২০০১ সালে ৩৮ জন থেকে ৬ জন, ২০০৮ সালে ৫৯ নারীর মধ্যে ১৯ জন, ২০১৪ সালে ২৯ জনের ১৪ জন নারী সরাসরি নির্বাচনে বিজয়ী হয়।

২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৯ জনকে দলীয় প্রার্থী করে। তারা সবাই জয় লাভ করে সংসদে যান। পরবর্তীতে উপ নির্বাচনে আরও ৫ নারী সংসদ সদস্য হন। তবে, এবার সংখ্যাটা আরও বেড়েছে।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে ২৯৮ জন প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে ২৪ জন নারী প্রার্থী রয়েছেন।

এই তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী ও স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী।

গাজীপুরের পাঁচটি আসনের তিনটিতে নারী প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ, যাদের তিনজনেরই দলীয় পরিচয় ছাড়াও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে রয়েছে ব্যাপক পারিবারিক পরিচিতি। তারা হলেন সিমিন হোসেন রিমি, মেহের আফরোজ চুমকি ও রুমানা আলী।

ময়মনসিংহের ১১টি আসনের মধ্যে নৌকার টিকেট পেয়েছেন একজন নারী। এছাড়া বরিশালে মনোনয়ন পেয়েছে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। সিরাজগঞ্জ-২ আসনেও এবারও আওয়ামী লীগের নারী প্রার্থী থাকছে। এছাড়া মানিকগঞ্জ- ২ আসনে কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, কিশোরগঞ্জ -১ আসনে সৈয়দ নজরুল ইসলামের কন্যা ডা. সৈয়দ জাকিয়া নূর, চাদপুর-৩ আসনে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি এবারও দলীয় প্রার্থী হয়েছেন।

দেশের রাজনীতির কেন্দ্র ঢাকার ২০টি আসনে নারী প্রার্থী মাত্র একজন। তবে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা গাইবান্ধার তিনটি আসনে সরাসরি তিনজন নারী প্রার্থী মনোনীত করেছে আওয়ামী লীগ। তাদেরই একজন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম মনে করেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক রাজনীতিতে নারী নেতৃত্ব সুনাম অর্জন করায় অংশগ্রহণ বাড়ছে ভোটের লড়াইয়ে।

যোগ্যতা অনুযায়ী নারী প্রার্থীদের সরাসরি ভোটে লড়াইয়ের বিষয়টি অত্যন্ত দূরদর্শী সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম। তিনি বলেন, বিশ্ব নেতৃত্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নারীকে এগিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই।

এবার মনোনয়ন পাননি বর্তমান চার নারী সংসদ সদস্য। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নিজান সুফিয়ান, নোয়াখালীর আয়েশা ফেরদৌস ও সিরাজগঞ্জের মেরিনা জাহান।

আওয়ামী লীগের মতো অন্য রাজনৈতিক দলকেও নারী প্রার্থীদের সরাসরি ভোটযুদ্ধে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ নারী সংগঠকদের। একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিতসহ ৭৯ জন নারী সংসদ সদস্য প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

এমএসএ

আরও পড়ুন:

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর