শিক্ষা
দেশে এখন
0

তিন মাস পর শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম

দীর্ঘ তিন মাস পর আজ খুলেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। বিভাগে বিভাগে ক্লাস পরীক্ষায় প্রাণ ফিরে পায় প্রিয় অঙ্গন। দীর্ঘদিন পর ক্লাস পরীক্ষা শুরু হওয়ায় খুশি শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। জুলাই আন্দোলনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী প্রাণ হারান।

এটি সেই ক্লাসরুম, যেখানে হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ও ফরহাদ সহপাঠীদের সাথে ক্লাস করতেন। এটি সেই ক্লাসরুম যেখানে তারা বন্ধুদের সাথে খুনসুটি আর দেশ বিদেশের ইতিহাস নিয়ে গল্প জুড়ে দিতেন। আজ তাদের সেই প্রিয় ক্লাসরুমে নতুনের কলতান। আছেন তাঁরা দুজনও, কিন্তু কেবলই ছবি হয়ে।

জুলাই আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এ দুই শিক্ষার্থী । তিন মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলার দিনে তাদের স্মরণে প্রথম বেঞ্চটি ফাঁকা রাখা হয়। ফুল দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

প্রদর্শিত হয় রক্তে রাঙা জুলাই আগস্টের বিপ্লবী দিনগুলোর ডকুমেন্টারি। হৃদয় তরুয়া ও ফরহাদদের আত্মত্যাগের গল্পগুলো ভেসে ওঠে চোখের সামনে। তখন চোখের জলে বাঁধা মানেনি শিক্ষক, সহপাঠী কিংবা বন্ধুদের। টগবগে তারুণ্যে ভরা দিনগুলো এখন কেবলই ইতিহাস।

জুলাই আন্দোলন শুরুর পর থেকেই কার্যত অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়। এক পর্যায়ে ১৭ জুলাই ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এর ক্যাম্পাস আড়মোড়া ভেঙে জেগে ওঠে শাটলের হুইসেলে।

শিক্ষার্থীদের চলন্ত এই ক্লাসরুমকে মিস করেন না এমন চবিয়ান খুঁজে পাওয়া ভার। তাই তো প্রথম দিনেই ছুটে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে ক্লাস যাওয়ার আগে জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতদের স্মরণ করতে ভুলেনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। তাঁদের স্মরণে চবি শহীদ মিনারে লাল ব্যাজ ধারণ ও প্রার্থনার আয়োজন হয়।

গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে নতুন বরাদ্দ দিয়ে তা খুলে দেয়া হয়। আজ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ায় খুশি শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। চবি উপাচার্য বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে জ্ঞান গবেষণার পরিসর বৃদ্ধিই প্রধান কাজ।’

চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহহিয়া আখতার বলেন, ‘ইউনিভার্সিটিতে সুষ্ঠুভাবে লেখাপড়া চালিয়ে, অ্যাকাডেমিক ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব পালন করে যেন যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা যায় সে কারখানা তৈরি করতে চাই।’

জুলাইে যে লক্ষ্য নিয়ে প্রাণ দিয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদয় তরুয়ার মতো হাজারো ছাত্র, জনতা, সে বৈষম্যহীন দেশের লক্ষ্য পানে লাল সবুজের পতাকাকে শক্ত হাতে এগিয়ে নিবে নীতি নির্ধারকরা, সে দাবি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের।

এএইচ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর