অপরাধ ও আদালত
দেশে এখন
0

দুই মাস ধরে শূন্য বিচারিক আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর পদ

প্রায় দুই মাস ধরে শূন্য ঢাকার বিচারিক আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের নিয়োগকৃত আইনজীবীর পদ। পাবলিক প্রসিকিউটর ও গভর্নমেন্ট প্লিডার না থাকার কারণে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলার স্বাক্ষগ্রহণসহ অন্যান্য কাজে বাড়ছে জটিলতা। মামলা পরিচালনায় বিচারিক আদালতগুলোতে দেখা দিয়েছে চরম স্থবিরতা। এদিকে আইনজীবীরা বলছেন, দ্রুতই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিয়োগ না দেয়া হলে মামলার জট বাড়তে থাকবে, আস্থা হারাতে থাকবেন বিচারপ্রার্থীরা।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন হয় টানা ১৫ বছর শাসন করা আওয়ামী লীগ সরকারের। সরকার পরিবর্তনের হাওয়ায় বদলে যায় দেশের প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগ ও অ্যাটর্নি জেনারেল। আত্মগোপনে চলে যায় ঢাকার নিম্ন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

২০০৯ সাল থেকে টানা সাড়ে ১৫ বছর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটরের পদে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর, তিনি চলে যান আত্মগোপনে। গত ২৭ আগস্ট তার পদ বাতিল করে নতুন পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে নিয়োগ দেয় আইন মন্ত্রণালয়। এতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিক্ষোভ আর বিরোধিতায় পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চাইলে নিয়োগ বাতিল করে আইন মন্ত্রণালয়।

এদিকে প্রায় দুই মাস ধরে ঢাকার বিচারিক আদালতের মামলার কার্যক্রম চলছে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছাড়া। যার কারণে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে বাড়ছে জটিলতা। তৈরি হচ্ছে বিচারিক সংকট।

আইনজীবীদের একজন বলেন, ‘পাবলিক প্রসিকিউটর না থাকায় মামলার সাক্ষ্য নেয়া ও সাক্ষী দেয়া এইটা ঠিকভাবে হচ্ছে না যার ফলে মামলার জট আরও বেড়ে যাচ্ছে।’

এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষের অনুপস্থিতিতে গেলো দুই মাসে জামিন পেয়েছেন একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসী। যা আতঙ্কের কারণ বলছেন আইনজীবীরা।

বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন মেজবাহ্ বলেন, ‘একটা মামলার তদন্ত থেকে রায় পর্যন্ত পাবলিক প্রসিকিউটর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’

গত ৫ আগস্টের পর থেকে একের পর এক আওয়ামী সরকারের এমপি, মন্ত্রী, আমলা গ্রেপ্তার হয়ে প্রতিদিনই আদালতে আসছেন। তাদের ঘিরে এজলাসে ভেতরেই তৈরি হচ্ছে হট্টগোল। রাষ্ট্রপক্ষের নিযুক্ত আইনজীবী না থাকায় স্বপ্রণোদিত হয়ে একেকদিন একেকজন হচ্ছেন রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তাকারী আইনজীবী।

বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন মেজবাহ্ বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনে যারা সরাসরি জড়িত তাদের বিষয়ে আদালতে তুলে ধরার জন্য পাবলিক প্রসিকিউটর দরকার। সে জায়গাটা একেবারে শূন্যতায় পরিণত হয়েছে।’

ঢাকা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানা যায়, ঢাকার নিম্ন আদালতে রাষ্ট্রের নিয়োগ করা সরকারি আইনজীবীর সংখ্যা শতাধিক। তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারিক সংকট বাড়তে থাকলে সহজেই পার পেয়ে যাবে অপরাধীরা এমন শঙ্কা আইনজীবীদের।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর