প্রায় এক মাসে পেরিয়ে গেলেও কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খুলতে পারেনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে কেবল সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার আর সিবিআইয়ের তদন্তেই ঝুলে আছে মামলা। কোন এক অজানা কারণে বন্ধ রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিও। যদিও, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এ অবস্থায় ন্যায় বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলন আরও বেশি জোরালো হচ্ছে। প্রতিদিনই কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলছে আন্দোলন। রাজনৈতিক অস্থিরতাও পৌঁছেছে চরমে। এমনকি আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে একটি চক্র সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের। পুরো ঘটনার জন্য আরও একবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দোষারোপ করছে বিরোধী নেতৃত্ব।
এদিকে আরজি কর কাণ্ডে রহস্যের জট না খুললেও, হাসপাতালটির সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ চক্রের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ আনছে সিবিআই। সবশেষ তদন্তে দেখা গেছে, হাসপাতালের খাট, ওষুধ এবং বিভিন্ন সরঞ্জামেই মাসে ৭ থেকে ৮ কোটি রুপির দুর্নীতি হতো আরজি করে। এই চক্রটি কীভাবে চলতো তাও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে সিবিআই।
সিবিআই এর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে ভারতের আর্থিক দুর্নীতি বিষয়ক তদন্ত সংস্থা ইডি। শুক্রবার সন্দীপসহ তার স্বজনদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে চালিয়ে ব্যাগভর্তি নথি জব্দ করে সংস্থাটি। হাওড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিপ্লব সিংকেও।
এর আগে, হাইকোর্টের নির্দেশে দুর্নীতির সঙ্গে ধর্ষণ-খুনের কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তাও খাতিয়ে দেখতে শুরু করে সিবিআই। পরে ওই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সন্দীপ ঘোষের করা আপিল শুক্রবার খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সিবিআই কিভাবে তদন্ত করবে তা পুরোপুরি তাদের বিষয়। এর মধ্য দিয়ে আরও বেশি বেকায়দায় পড়লেন আরজি কর হাসপাতালের সবেক এই অধ্যক্ষ।