রেকর্ড উৎপাদনেও স্বস্তিতে নেই চা শিল্পে

ইজামুল এহসান
মৌলভীবাজার
রেকর্ড উৎপাদনেও স্বস্তিতে নেই চা শিল্পে
রেকর্ড উৎপাদনেও স্বস্তিতে নেই চা শিল্পে | এখন
0

দেশে সর্বোচ্চ উৎপাদনের রেকর্ড হলেও স্বস্তিতে নেই চা শিল্প। সরবরাহ বাড়লেও কমেছে চা বিক্রি ও গড় দাম। উৎপাদন খরচ অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বন্ধের পথে অনেক বাগান।

১৮৫৪ সালে দেশে বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাগানের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে উৎপাদন। গত মৌসুমে ১৬৮টি ছোট-বড় বাগান মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদন হয়।

উৎপাদন বাড়লেও কমেছে চায়ের চাহিদা। এছাড়া নিলামে কমেছে চায়ের বিক্রি ও গড় দাম। ফলে খরচ অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বন্ধের পথে অনেক বাগান।

সিলেট অঞ্চলের বাংলাদেশিয় চা সংসদের প্রেসিডেন্ট জি এম শিবলী বলেন, 'ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে তাই উৎপাদন বাড়ছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন বাড়াতে হবে। হেক্টর প্রতি  উৎপাদন বাড়লে, কস্ট অব প্রোডাকশন কমবে। তখন হয়তো ব্যবসা লাভজনক হবে।'

শ্রী গবিন্দপুর চা বাগানের মহসিন টি হোল্ডিংসের স্বত্বাধিকারী মহসিন মিয়া মধু বলেন, 'প্যাকেটজাত করার সময় ২৫- ৮০ শতাংশ চা খারাপ দিচ্ছে। যেকারণে চা শিল্পের দুরবস্থা।'

এদিকে, নিম্নমানের চা উৎপাদন ও আমদানিও বেড়েছে। এতে রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি নানা সমস্যায় পড়ছে শিল্পটি। এ অবস্থায় মানভেদে চায়ের দাম বেঁধে দেয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্ঠা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, 'চা যারা উৎপাদন করছে তারা যদি মূল্য না পায় তাহলে সমস্যা সৃষ্টি হবেই। সেজন্য চায়ের একটা ভিত্তি মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত। যার কমে চা বিক্রি হবে না।'

শ্রীমঙ্গলের টি ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম এন ইসলাম মুনির বলেন, 'আপতত হলেও চা শিল্পকে যদি কৃষি মন্ত্রণালয়ে অধীনে কৃষি পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত হয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্সের ঝামেলা থেকে বাঁচবে এই শিল্প।'

চা বোর্ড বলছে, নতুন জাত উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াতে ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে বেশকিছু উদ্যোগ। আর গুণগতমান বাড়াতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রেখে ভালো জাত নির্বাচনের পরামর্শ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, 'চায়ের গুণগতমান ও ভালো দামের সাথে কৃষিতাত্ত্বিক পরিচর্যা, জলবায়ু পরিবর্তন এই বিষয়গুলো জড়িত ।'

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলাম বলেন, ' উদ্বৃত্ত চা রপ্তানির ব্যবস্থা করতে হবে। সেই লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।'

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, 'মৌলিভীবাজারে দেশের সব থেকে বেশি চা বাগান রয়েছে। আর এই চা শিল্প দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।'

গেল মৌসুমে দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। উৎপাদন হয় প্রায় ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি। এই মৌসুমে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৫০ লাখ কেজি।

সেজু