কৃষি , শস্য
দেশে এখন
ফসল হারিয়ে দুশ্চিন্তায় হাওরের কৃষক
সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে চলতি মৌসুমে ভালো ফলন হয়েছে বোরো ধানের। তবে ধান কাটার সময় দুই ধরনের চিত্র দেখা যায় জেলার হাওরে। একদিকে উল্লাসের মধ্যদিয়ে ধান কাটার উৎসবে মেতেছেন ১৩৬ হাওরের কৃষকরা। অন্যদিকে চৈত্রের শেষ দিকের বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হওয়ায় অনেকটা হতাশায় দিন কাটছে দেখার হাওরের কৃষকদের।

কেউ স্বপ্নের সোনালী ধান কাটছেন, কেউ আবার ব্যস্ত মাড়াইয়ে। সুনামগঞ্জের ১৩৭টি হাওরের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যায় একই জেলার দেখার হাওরে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী। মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা এনে ২০ একর জমিতে রোপন করেছিলেন বোরো ধান। তবে ৬ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া চৈত্রের টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তার সব স্বপ্ন।

ইউসুফ আলী বলেন, 'সুদের টাকায় ধান করছিলাম। সব ধান ডুবে গেছে। ধান তো পাব না। সুদের টাকা কেমনে দিব।'

শুধু ইউসুফ আলী নয়, বরং হতাশার একই গল্প শোনান জেলার ৭ গ্রামের শতাধিক কৃষক। তারা বলেন, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য দেখার হাওরে কোনো পথ না থাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে তলিয়ে যায় কৃষকদের আধা পাকা ধান।

একজন কৃষক বলেন, 'আমরা অনেক কষ্ট করে ঋণ করে এই জমিগুলো চাষ করেছিলাম। ঋণ করে ধার রাগাইছিলাম। এখন আমরা চলবো কিভাবে। পানি বের হওয়ার রাস্তা নাই। পানি বের না হলে আর ধান করা যাবে না।'

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, দেখার হাওরে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে তা নিষ্কাশনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, 'জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় আমরা এটা নিষ্কাশনের জন্য ব্যবস্থাগ্রহণ করছি। আশা করছি চাষীরা তাদের ক্ষতিটা পশিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।'

এ বছর সুনামগঞ্জে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২৭০ টন বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে এই পানিতে তলিয়ে গেছে ৩৫০ মেট্রিক টন ধান। যার বাজার দর প্রায় কোটি টাকা।

এমএসআরএস