রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬, ১০ এবং বিশেষ শিশু ওয়ার্ডের পাশাপাশি বর্হিঃবিভাগের রোগীদের নাজুক অবস্থা। এখানে আগত ৮০ শতাংশ মা-বাবা সন্তানকে এনেছেন ঠান্ডাজনিত রোগের নানা লক্ষণ নিয়ে।
শিশুদের অভিভাবকরা বলেন, 'ঠান্ডায় বাচ্চার কাশির পাশাপাশি পেট ব্যাথা হচ্ছে তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।'
গেল সপ্তাহ জুড়ে রাজশাহীতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সমস্যা বাড়ছে শিশু ও বৃদ্ধদের। তাতে দূরের পথ পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে আসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ বাড়ছে।
রোগীরা বলেন, 'আমরা গরিব মানুষ ওষুধ কিনতে পারতেছি না। হাসপাতাল থেকে যা দিছে তাই খাইতাছি।'
চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধের সরবরাহসহ রোগীর সেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
রাজশাহীতে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে অভিভাবকদের ভিড়
অন্যদিকে চট্টগ্রামেও জেঁকে বসেছে শীত। সূর্য ডোবার পালা এলেই অন্ধকারের কাঁধে চড়ে প্রতি রাতেই হানা দিচ্ছে হিমেল হাওয়া। শীতের এই চোখ রাঙানিতে কাবু হচ্ছে নানা বয়সী মানুষ। বিশেষ করে শিশুদের রোগ বাড়ছে। আর অভিভাবকদের কপালে বাড়ছে দুশ্চিন্তার ছাপ।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে বাড়ছে রোগীর চাপ। গত ৯ দিনে এখানে মারা গেছে ২১ শিশু। যাদের বেশিরভাগই এসেছে অনেক দেরি করে। ততদিনে আরও তীব্র হয়েছে শ্বাসকষ্ট আর খিঁচুনির মতো জটিলতা।
সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালের দুটি শিশু ওয়ার্ডে মোট রোগী ভর্তি ২০৪ জন। এ মাসের শুরু থেকে এসেছে ৩ শতাধিক শিশু। দূর-দূরান্ত থেকে দেরি করে আসা শিশুদের রোগ সারতে সময় লাগছে বেশি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের অভাব নেই। তাদের পরামর্শ শিশুদের সময়মতো চিকিৎসকের কাছে নেয়ার।
চট্টগ্রামে শ্বাসকষ্টে ভুগছে এক শিশু
চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জেবিন চৌধুরী বলেন, 'বাচ্চার সমস্যা মনে হলে চট করে পরামর্শ নিতে হবে। তাতে খারাপ দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে প্রতিরোধ করা যায়। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হলে ফলাফলটাও ভালো হয়।'
এদিকে তাপমাত্রার পারদ নেমেছে বরিশালেও। ফলে এখানকার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতেও অসুস্থ শিশুদের নিয়ে ভিড় করছেন অভিভাবকরা। তবে পরিস্থিতি জটিল হলে তাদের পাঠানো হয় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অভিভাবকরা জানালেন শিশুদের নিয়ে ভোগান্তির কথা।
এ অবস্থায় চিকিৎসকরা শীতে শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। একইসাথে আতঙ্কিত না হয়ে সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার কথাও জানান।
বরিশালে শিশু বিভাগে রোগিদের চিকিৎসা দিচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা
বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা বলেন, 'যদি কোন শিশু ঘনঘন শ্বাস নেয় এবং শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে বুঝতে হবে শিশুটির অবস্থা খারাপ। ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে বাচ্চার চামড়া কুচকে যাওয়া, প্রস্রাব কমে যাওয়া, পানি বা স্যালাইন খেতে পারছে না তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।'
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ২৬১ জন রোগী। এর মধ্যে ৪ ভাগের ১ ভাগই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।