তথ্য-প্রযুক্তি
বিদেশে এখন
0

সাইবার হামলার মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ভোল্ট টাইফুনের গবেষণা প্রতিবেদন

বিশ্বজুড়ে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে প্রতিপক্ষদের ঘায়েল করার চেষ্টা করে আসছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। শুধু তাই না বিশ্বব্যাপী টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপরও নজরদারি চালিয়েছে তারা। চীন, জার্মানিসহ প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। চীনের সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ভোল্ট টাইফুনের এক প্রতিবেদনে এসব অভিযোগ উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আবারও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তুলেছে চীন। সাইবার জগতে এসব গুপ্তচরবৃত্তির কার্যক্রম চালিয়ে আসছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। অভিযোগে বলা হয়েছে, সাইবার হামলার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে তদন্ত কাজ ও গবেষণায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেদনে এ তথ্য উন্মোচন করেছে চীনের ন্যাশনাল কম্পিউটার ভাইরাস ইমার্জেন্সি রেসপন্স সেন্টার ভোল্ট টাইফুন।

প্রতিবেদনটি এই প্রথম চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, জাপানিসহ একাধিক ভাষায় প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে এসব কার্যক্রম চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেদন আরও উঠে এসেছে, কীভাবে মার্কিন সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর নির্বিচারে নজরদারি চালিয়েছে। এর মাধ্যমে মার্কিন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলো রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা লুটেছে।

একটি প্রতিষ্ঠানকে অন্য প্রতিষ্ঠানের নাম ধারণ করে প্রতারণার আশ্রয় নেয়। এক্ষেত্রে সাইবার আক্রমণের আসল উৎস খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে বলে জানান এই অ্যান্টি ভাইরাস গবেষক।

অ্যান্টি ল্যাব টেকনিক্যাল কমিটির ডেপুটি ডিরেক্টর লি বোসোং বলেন, ‘এটি আসলে সাইবার আক্রমণের সাধারণ কৌশল। যেমন প্রতিষ্ঠানকে অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে উপস্থাপন করা হয়। এই ধরনের প্রতারণা বিভিন্ন দিক থেকে হতে পারে। তখন কমান্ড ও কন্ট্রোল সার্ভারের গুপ্তচরবৃত্তির উৎস খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়।’

সাইবারস্পেসে প্রতিরক্ষামূলক কৌশল ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মার্বেল কোডনামে একটি গোপন টুলকিট তৈরি করে সাইবার আক্রমণের দায়ভার অন্য দেশের ওপর চাপিয়েছে। মার্বেলের মাধ্যমে ম্যালওয়্যার তৈরি করে আঙুলের ছাপও মুছে ফেলা হয়।

ন্যাশনাল কম্পিউটার ভাইরাস ইমার্জেন্সি রেসপন্স সেন্টারের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ডু জেনহুয়া বলেন, ‘মার্বেলের প্রাথমিক কাজ হল স্পাইওয়্যার বা ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে শনাক্তযোগ্য কোডের বৈশিষ্ট্যগুলো অস্পষ্ট বা মুছে ফেলা। এটি কার্যকরভাবে আঙ্গুলের ছাপও মুছে ফেলে। এমনকি যেকোনো অস্ত্রের উৎস শনাক্ত করাও অত্যন্ত কঠিন করে তোলে।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারনেট কোম্পানির সার্ভার থেকে ডাটা সরাসরি অ্যাক্সেস নেয়া হয়। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টারের সহায়তায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে প্রেরিত ডাটা বিশ্লেষণ করে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য চুরি করে যুক্তরাষ্ট্র।

চুরি হওয়া এসব ডাটা পাঠযোগ্য ও ডিকোডিং করার জন্য আপস্ট্রিম ও প্রিজম নামে দুটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব প্রকল্পের চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে তারা মাইক্রোসফ্ট, ইয়াহু, গুগল, ফেসবুক ও অ্যাপলের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরাসরি ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে।

এএইচ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর