দেশে এখন
0

হোসিয়ারী পল্লীতে শীত মৌসুমে ব্যবসা হয় প্রায় ৫শ কোটি টাকার

গাইবান্ধা

কয়েকদিন বাদেই প্রকৃতিতে আসবে শীতের আমেজ। তাই ব্যস্ততার শেষ নেই গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের হোসিয়ারী পল্লীতে। স্বল্পমূল্যে শীতবস্ত্রের পাইকারি বাজারে ইতোমধ্যেই পাইকারদের আনাগোনা বেড়েছে। কয়েকদিন পরে দম ফেলানোর সুযোগ থাকবে না কারিগরদের। শীত মৌসুমে এই বাজার ঘিরে ব্যবসা হয় প্রায় ৫শ কোটি টাকার। তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও সড়ক ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় বেগ পেতে হচ্ছে এখানকার ব্যবসায়ীদের।

খুটখাট শব্দে চলছে শীতবস্ত্র তৈরির ব্যস্ততা। কর্মচারীদের তোরজোরই বলে দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।

পায়ের মোজা, সোয়েটার, কার্ডিগেন, চাঁদর, মাথার টুপি, মাফলার, কম্বল সবকিছুই তৈরি হচ্ছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কোচাশহর ইউনিয়নে। এসব শীতবস্ত্র উত্তরাঞ্চলের প্রায় সব জেলাতে বিক্রি হয়। তবে নানা প্রতিবন্ধকতায় বেচাবিক্রিতে সমস্যায় পড়তে হয় উদ্যোক্তাদের।

কারখানা মালিকদের মধ্যে একজন বলেন , 'বহুদিন ধরে আমরা চেষ্টা করতেছি রোডটা ঠিক করার।এবছর টেন্ডার হওয়ার কথা যেটা প্রতিবছরই বলে। মূলত কাজ আমরা পাইনা।'

শীত একটু পিছিয়ে যাওয়ার কারণে বেচাকেনার একটু সমস্যা হচ্ছে। লোকজন আসছেনা বলেও জানান একজন।

দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকাররা বলছেন, মধ্যবিত্ত এবং নিম্নআয়ের ক্রেতারাই সাধারনত কোচাশহরের মালামাল পছন্দ করেন। অল্প দামে তুলনামূলকভাবে মানসম্পন্ন শীতবস্ত্র কিনতে পারায় প্রতিবছরই এখানে আসেন তারা। তাদের মতো অনেক ব্যবসায়ী আসছেন এখান থেকে পণ্য কিনতে।

পাইকারদের মধ্য একজন জানান, এখানে ভালো মানের কিছু মাল পাওয়া যায় । ঢাকার থেকে দাম কম।

আরো একজন পাইকার জানান, এখানে সবকিছু কিনতে সুবিধা। এইজন্য এখানে আসি।

হোসিয়ারী শিল্প ঘিরে গাইবান্ধার কোচাশহর ইউনিয়নের হাজারো কারখানায় প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই খণ্ডকালীন কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। শ্রমিকরা বলছেন, ৬ মাস কাজ করে সারাবছর তাদের সংসার ভালভাবেই চলে।

৬ মাসে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকার কাজ হয়। এটা দিয়ে মোটামুটি সংসার চলে কোনো সমস্যা হয়না বলেও জানান একজন শ্রমিক।

হোসিয়ারী পল্লীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট এবং ব্যাংক না থাকায় সৃষ্ট অসুবিধার কথা স্বীকার করে উপজেলা কর্মকর্তা জানান, সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন তারা। শিগগিরই রাস্তাঘাট সংস্কারে কার্যাদেশ দেয়া হবে। ব্যাংক স্থাপনসহ বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নেও যোগাযোগ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে।

গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া বলেন, 'রাস্তার বিষয়টা নিয়ে এলজিডির সাথে কথা হয়েছে। এটি অতি দ্রুতই সংস্কার হবে। আর তাদেরকে যে ঋণ নিয়ে কিছু কর্মসূচি আমাদের পল্লী উন্নয়ন সমবায় দপ্তর থেকে করা হয়েছে। তারা যদি কেউ আগ্রহী হয় তাহলে এটা আমরা অবশ্যই ইতিবাচকভাবে দেখব।'

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কোচাশহর ইউনিয়নের ৫টি গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে ছোট-বড় প্রায় ১ হাজার ৪শ' কারখানায় শীত বস্ত্র তৈরির কাজ চলে। আর এসব কারখানায় কাজ করে লক্ষাধিক শ্রমিক ।

এফশি

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর