দেশে এখন

নাব্য সংকটে কাপ্তাই হ্রদে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

নাব্য সংকটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে কাপ্তাই হ্রদে। এতে চরম ভোগান্তিতে রাঙামাটির ৬ উপজেলার অন্তত ৫ লাখ বাসিন্দা। নৌযান মালিকদের দৈনিক ক্ষতি অন্তত ১৫ লাখ টাকা। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে এমন সমস্যা হলেও পলি ড্রেজিংয়ে কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

১৯৬০ সালে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ প্রকল্পের হাত ধরে তৈরি হয় বহুমূখী কাপ্তাই হ্রদ। তবে, হ্রদ সৃষ্টির ৬৪ বছর পেরিয়ে গেলেও একবারও অপসারণ হয়নি পলি। মানব সৃষ্ট নানা কারণেও কমেছে গভীরতা। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে দেখা দেয় নাব্য সংকট।

চলতি বছর ২৭ এপ্রিল থেকে নাব্য সংকটে বন্ধ লঞ্চ চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে নানিয়ারচর, লংগদু, বাঘাইছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলার অন্তত ৫ লাখ বাসিন্দা। বাধ্য হয়ে ইঞ্জিন চালিত ছোট নৌকায় কিংবা পায়ে হেঁটেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে দুর্গম উপজেলাবাসীকে। পণ্য পরিবহনেও বেড়েছে খরচ। এতে প্রভাব পড়েছে দামে।

যাত্রীদের একজন বলেন, 'যদি ১ মিনিট দেরি হয় তাহলে নৌকা চলে যাবে। এরপর ১ ঘণ্টা পর আসবে। এতে করে সময় নষ্ট হচ্ছে।'

আরেকজন বলেন, 'পণ্য আনা নেয়ায় খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে আগের তুলনায়।'

প্রতিবছর খরা মৌসুমে পানি শুকিয়ে হ্রদে অসংখ্য ডুবোচর, গাছের গুড়ি জেগে ওঠে। এতে যাত্রীবাহী লঞ্চ, বড় ইঞ্জিনবোট বন্ধ হয়ে যায়। নৌযান মালিকদের দৈনিক ক্ষতি অন্তত ১৫ লাখ টাকা। আয় বন্ধ হাজার হাজার নৌযান শ্রমিকের।

লঞ্চ চালকদের একজন বলেন, 'পানি কমে যাওয়ায় গাছের গুড়ির সাথে নৌকাগুলো বাড়ি খাচ্ছে। এতে নৌকা চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ছে।'

দীর্ঘদিন ধরে হ্রদ ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়েও কোন কাজে আসছে না বলে জানান লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি।

রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মঈনউদ্দিন সেলিম বলেন, 'আমাদের একমাত্র বাহন লঞ্চ। সবাইকে লঞ্চে আসা যাওয়া করতে হয়। সবগুলো লঞ্চ মিলিয়ে নৌ পরিবহন মালিকদের প্রতিদিন ১০ লাখের কাছাকাছি লোকসান হচ্ছে।'

জেলা প্রশাসক জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৯৭৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। দ্রুত সমাধান হবে পলি সমস্যার।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, 'এই জেলার পাঁচটি উপজেলায় যাতায়াতের সবচেয়ে উপযুক্ত হচ্ছে নৌপথ। আমরা আশা করছি দ্রুত এই পলি সমস্যা সমাধান হবে।'

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর  

No Article Found!