চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আছে বিরল অ্যালবিনো বা সাদা বাঘ। এ চিড়িয়াখানায় বাঘের সংখ্যা ১৪টি। দিনভর তাদের গর্জন ভয় ধরায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের মনে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বাঘ। ছবি: এখন টিভি
জলহস্তী, ক্যাঙ্গারু, ইমুসহ ৬৭ প্রজাতির ৬০০ এরও বেশি প্রাণী আছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। বিরল এসব প্রানী দেখতে ভিড় করেন দর্শনার্থীরা। টিকিট বিক্রির আয়ে চলে পশুর খাবার, রক্ষণাবেক্ষণ, নতুন পশু ক্রয়সহ কর্মীদের বেতন ভাতা ও আনুসঙ্গিক সব কার্যক্রম।
এ বছর দর্শনার্থীর আগমন আর আয়ে অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে যায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। কর্তৃপক্ষের হিসাবে, ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি আয় করে ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সে বছর দর্শনার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৯০ হাজার।
২০২১ সালে দর্শনার্থী প্রায় ২ গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬ লাখে, আয় হয় ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা। ২০২২ সালে দর্শনার্থী আসে ৯ লাখ ৭৪ হাজার, আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬ কোটি ৮১ লাখ। সবশেষ ২০২৩ সালে ১০ লাখ দর্শনার্থী থেকে আয় দাঁড়ায় ৭ কোটি ২৪ লাখে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, 'আমাদের চিড়িয়াখানা আর্থিকভাবে যথেষ্ট সাবলম্বী। চট্টগ্রাবাসী যদি আমাদের একটু সহযোগিতা করে তাহলে চিড়িয়াখানা আরও এগিয়ে যাবে।'
গেল বছর এক মাসেই কোটি টাকা আয়ের মাইলফলক স্পর্শ করে এই চিড়িয়াখানা। বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে আয় হয় ৮০ লাখ টাকা, জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৭ লাখ টাকায়। আর ডিসেম্বরে আয় দাঁড়ায় ১ কোটি ১ লাখে।
শাহাদাত হোসেন শুভ আরও বলেন, 'বিগত কয়েকবছর ধরে এর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নতুন নতুন প্রাণী সংযোজন ও সুশাসনের কারণে চিড়িয়াখানা এখন লাভজনক একটা অরগানাইজেশনে দাঁড়িয়েছে। আশা করা হচ্ছে অতিদ্রুত এটা দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ভালোমানের একটা দর্শনীয় স্থান হিসেবে রুপান্তরিত হবে।'
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পাখি। ছবি: এখন টিভি
ধারাবাহিকতা রক্ষায় নতুন আরও তিন প্রজাতির প্রাণী দ্রুত কিনতে চায় কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে সিঙ্গাপুরের বার্ডস প্যারাডাইস কিংবা মালয়েশিয়ার বার্ডস পার্কের আদলে এখানে একটি বার্ডস পার্ক করারও পরিকল্পনা আছে। যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী, দ্রুতই সেসব কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে আশা জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের।
তিনি বলেন, 'আমাদের একটি পরিকল্পনা আছে চট্টগ্রামে একটি বার্ডস পার্ক করার। সিঙ্গাপুরের বার্ডস প্যারাডাইস কিংবা মালয়েশিয়ার বার্ডস পার্কের আদলে করতে পারলে সেখানেও প্রচুর দর্শনার্থী আসবে।'
চিড়িয়াখানায় প্রতিদিন প্রায় ২৭ ধরনের ৫২৮ কেজি খাবার দেয়া হয় পশুপাখিকে। খাবারসহ বিভিন্ন খাতে প্রতি মাসে চিড়িয়াখানার ব্যয় হয় প্রায় ২৫ লাখ টাকা। বাকি টাকা ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা হয়; যা দিয়ে নতুন পশু কেনা কিংবা অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হয়।