ইতালিতে কাজের সুযোগ পেলেও, নাগরিকত্ব না থাকায় প্রশাসনিক কোনো কাজে সম্পৃক্ত হতে পারছেন না তাসাফ্ফা কামরুল মাধবীর মতো হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশি।
আবার, জন্মের পর ইতালির কৃষ্টি ও সংস্কৃতির মধ্যে বড় হওয়া বিদেশি শিশুকে নাগরিকত্ব দিচ্ছে না জর্জা মেলোনি সরকার। আর, খুব ছোট বেলায় সন্তানকে ইতালিতে নিয়ে এসেও তার নাগরিকত্ব না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন এমন অভিভাবকের সংখ্যাও নেহাত কম নয়।
রাজনৈতিক কারণে আটকে আছে ইতালির নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া। বর্তমান আইনে, ১০ বছর স্থায়ীভাবে বসবাসের আগ পর্যন্ত ইতালিতে অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান নেই।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন দেশটিতে বসবাসরত অন্তত ২৫ লাখ প্রবাসী। একই অভিযোগ ইতালিতে অবস্থানরত প্রায় ২ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিরও। সাম্প্রতিক গণভোটে সন্তোষজনক ফল আসায়, ইতালির নাগরিকত্ব অর্জনের পথ সুগম হবে বলে মনে করছেন তারা।
অভিবাসী সমর্থক গোষ্ঠী, সামাজিক সংগঠন এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগে আয়োজিত গণভোটে নাগরিকত্ব অর্জনের সময়সীমা ১০ বছর থেকে ৫ বছরে কমিয়ে আনার পক্ষে রায় দিয়েছেন অন্তত ৬ লাখ ইতালিয়ান। এছাড়া, সন্তানদের দ্রুত নাগরিকত্ব দেয়ার দাবিও জানাচ্ছেন তারা।
গণভোটের এই রায় পর্যালোচনায় ভার এখন ইতালির সুপ্রিম কোর্ট ও সাংবিধানিক আদালতের। প্রয়োজন পড়লে আগামী বছর বসন্তে আবারও দেশজুড়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিরোধীদের অভিযোগ, ডানপন্থি রাজনৈতিক দল ফ্রাতেল্লি দি ইতালিয়া ও লেগার সমর্থন না থাকায় এখনও পর্যন্ত সংস্কার হয়নি ইতালির নাগরিকত্ব আইন। যদিও, অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে এই আইনের ভবিষ্যৎ।
ইতালিতে জন্মহার কমে যাওয়ায় দেশটির অর্থনীতিকে চাঙা করতে বিদেশিদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়ে বরাবরই যুক্তি দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। যদিও প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি বলছেন, অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়া জনসংখ্যাগত সংকটের কোনো সমাধান নয়।