১৯৯০ সালে বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট এবং ২০০২ সালে অবসর সুবিধা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করে সরকার। স্বায়ত্তশাসিত এ দু'টি প্রতিষ্ঠানই বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তবে প্রতিষ্ঠান দু'টির বিরুদ্ধে পেনশনের টাকা পেতে দীর্ঘ অপেক্ষাসহ নানা ভোগান্তির অভিযোগ বেশ পুরনো। পেনশন পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষার নজিরও আছে।
১৯৯৯ সালের আইন অনুযায়ী বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা দেয়ার বিপরীতে বেতনের ৬ শতাংশ কেটে রাখা হতো। ২০১৭ সালে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। তবে সুযোগ সুবিধা আগের মতোই থাকে।
পরে শিক্ষকরা বাড়তি কেটে রাখা টাকার বিপরীতে সুবিধা ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা পাবার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জিনাত আরার হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল নিষ্পত্তি করে ১০ শতাংশ কেটে রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। একইসঙ্গে ৬ মাসের মধ্যে শিক্ষকদের সুযোগ সুবিধা দেয়ার আদেশ দেন।
রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, '১০ শতাংশ কর্তন বহাল থাকবে কিন্তু বাড়তি সুবিধা আনুপাতিক হারে দিতে হবে। এ সুবিধা পেতে অনেক সময় ৩ থেকে ৪ বছর লেগে যায়। এটি ৬ মাস করে দিয়েছেন। যে ছয় মাসের ভিতরে সমস্ত সুবিধা তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।'
এই রায়ের ফলে এমপিওভুক্ত পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষকের অবসরকালীন সুবিধা ৪০ শতাংশ বাড়ছে। রায়ে সন্তুষ্ট শিক্ষকরা।
শিক্ষক নেতা আমিনুল ইসলাম মাসুদ বলেন, '৬ শতাংশে আমরা যে সুযোগ সুবিধা পেতাম অতিরিক্ত ৪ শতাংশে সে সুযোগ সুবিধা পেতাম না। এখন আদালত বলে দিয়েছেন এ ৪ শতাংশের জন্য আনুপাতিকহারে আমাদের সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে। সারাদেশের সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষক এ রায়ে সন্তুষ্ট।'
রায়ের সময় আদালত বলেন, অবসরের পর কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের টাকা তুলতে শিক্ষকদের বছরের পর বছর ঘুরতে হয় যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই আদেশ পালন করা না হলে আদালত অবমাননার দায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন আদালত।