দেশে এখন
0

জলাশয় ভরাট ও গাছ কাটায় বিলুপ্তির পথে বক

গ্রাম বাংলার এক চিরচেনা পাখি বক। সকাল থেকে খাল-বিল, নদী-নালাসহ বিভিন্ন জলাশয়ে আহারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায় এই পাখি।

কখনও শিকার ধরতে জলের ধারে চুপটি করে দাঁড়িয়ে থাকে বক। এরপর ছোঁ মেরে লম্বা ঠোঁটের সাহায্যে চোখের পলকে শিকার করে ছোট ছোট মাছসহ নানা জলজ প্রাণী।

চাঁদপুর শহরের স্বর্ণখোলা এলাকা, জেলার সবচেয়ে বড় ময়লার ভাগাড়। সকাল থেকেই পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, হাসপাতাল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানের ময়লা সংগ্রহ করে এখানে নিয়ে আসেন। আর এসব ময়লা থেকেই খাবার সংগ্রহে চিল, কাকের পাশাপাশি দলবেঁধে সাদা বক এই ভাগাড়ে ছুটে আসে। খাল-বিল আর জলাভূমির সংকটে মৎস্যভোজী বকের খাদ্য গ্রহণের প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে এই ভাগাড়।

স্থানীয়রা বলেন, জলাশয় না থাকায় এই বকগুলো বাধ্য হয়ে খাবারের সন্ধানে ময়লার ভাগাড়ে আসছে। আর নির্বিচারে গাছপালা কাটায় একদিকে বাসস্থান সংকট, অপরদিকে খাদ্যের অভাবে বকদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

চাঁদপুর সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান ড. সুলতানা তৌফিকা আক্তার বলেন, জলাশয়ে মাছ না থাকায় বকগুলো খাদ্য সংকটে পড়ছে। আর বাধ্য হয়েই ময়লার ভাগাড় থেকে খাবারের সন্ধান করছে।

পরিবেশ সংগঠক মতিন সৈকত বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে, পরিবেশ বাঁচলে প্রকৃতি বাঁচবে, প্রকৃতি বাঁচলে আমরাও বাঁচবো। আর আমাদের দ্বারা পরিবেশের যেন কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

জেলায় কতটি জলাশয় রয়েছে বা ভরাট হয়েছে তার হিসাব নেই পরিবেশ অধিদপ্তরে। তবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সবাইকে আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন চাঁদপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।

বক সাধারণত ব্যাঙ, ছোট মাছ, সাপ ও জলজ পোকামাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। পৃথিবীতে মোট ৬৪টি প্রজাতির বক থাকলেও বাংলাদেশে সাধারণত কয়েক প্রজাতির বক দেখতে পাওয়া যায়।