নৌপথের যোগাযোগ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আশির দশকে চাঁদপুরে গড়ে ওঠে চালকল শিল্প। প্রথম দিকে হলার কিংবা চাতাল দিয়ে ধান থেকে চাল তৈরি হতো। পরে ২০০০ সালের দিকে পুরনো এসব কল বিলুপ্ত হয়ে যায়। এখন সেই স্থান দখল করে নিয়েছে অটোমেটিক রাইস মিল।
বর্তমানে জেলায় ১৭টি অটোরাইস মিল রয়েছে। এর মধ্যে শহরের পুরানবাজারেই রয়েছে ১২টি রাইস মিল। এসব মিলে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।
শ্রমিকরা বলেন, দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে মিলে কাজ করি। বিভিন্ন কাজ করতে হয়। তবে মিলে কাজের সুযোগ হওয়ায় আমরা পরিবার নিয়ে ভালো আছি।
পুরানবাজারের খাজাবাবা অটোরাইস মিলে প্রতিদিন ২৮ থেকে ৩০ টন চাল উৎপাদন হয়। প্রকারভেদে এসব মিলে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০ টন চাল উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। জেলায় প্রতিদিন প্রায় ৬শ' টন চাল উৎপাদন হয়। এসব মিলে বিআর ২৩, ২৮, ২৯ ও গুটি চাল উৎপাদন হচ্ছে। মানভেদে এসব চাল পাইকারিতে কেজি প্রতি ৪৩ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
রাইস মিলগুলোতে উৎপাদিত চাল লক্ষ্মীপুর, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা হয়। তবে মিলগুলোতে মোটা চাল উৎপাদন করা গেলেও চিকন চাল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।
চাঁদপুর অটো হাস্কিং অ্যান্ড রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম কিশোর বলেন, আর্থিক সংকটে আধুনিক মেশিন স্থাপন করতে না পারায় আমরা চিকন চালের বাজার ধরতে পারছি না। আর ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা পেলে আরও কয়েকশো টাকার চালের বাণিজ্য হবে বলে তিনি জানান।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, রাইস মিল মালিকরা আমাদেরকে জানালে ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।
জেলায় বছরে প্রায় ৩ লাখ টন চালের প্রয়োজন পড়ে। এর মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টন চাল উৎপাদন করছে স্থানীয় রাইস মিলগুলো। এজন্য প্রায় ৫ লাখ টন ধানের প্রয়োজন হয়।