দেশে প্রতিমাসে বিমানের ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়। যার মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকার টিকিটি বিক্রি করে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি বা ওটিএ। ওয়ান স্টপ সুবিধার কারণেই দিন দিন ওটিএ'র প্রতি গ্রাহকদের নির্ভরতা বাড়ছে।
বড় হচ্ছে দেশের আকাশ পথ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এই পথে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এয়ারলাইন্সগুলো বাড়াচ্ছে সক্ষমতা, ঢাকার বাইরের বিমানবন্দরগুলোতেও চলছে সম্প্রসারণ কাজ।
গত ১০ বছরে দেশের আকাশপথের যাত্রী বেড়েছে দ্বিগুণ। আর ২০৩৫ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বর্তমানের তিনগুণ হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ লাখ যাত্রী উড়োজাহাজে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। ২০২১ সালে যে সংখ্যা ছিলো মাত্র ২০ লাখ। এতোদিন এই বিপুল সংখ্যক যাত্রীর বিমান টিকিটের যোগান দিতো সাড়ে ৩ হাজার লাইসেন্সধারী ট্রাভেল এজেন্ট। লাইসেন্স ছাড়া আরও প্রায় হাজার খানেক এজেন্সি এই প্রক্রিয়ায় জড়িত রয়েছে।
তবে করোনাকালে বাজার হারাতে থাকে এই এজেন্টরা। সেই জায়গা দখল করতে থাকে ওটিএ। কেন ওটিএ'র দিকে ঝুঁকছে সেই বিষেয় ট্রিপ লাভারের সিইও নিশা তাসনিম শেখ বলেন, ‘এর সুবিধা হচ্ছে কোন এয়ালাইন্সের কাছে যাত্রীদের যেতে হয় না। চয়েজ অপশনসহ পেমেন্ট সব একসঙ্গে করা যায়। আর ট্রাভেল প্ল্যান করে সুবিধামতো টিকিটও সংগ্রহ করতে পারে।’
শুধু যাত্রীরাই নয়, অনলাইন এজেন্সিগুলো থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের এজেন্সিগুলোও টিকিট সুবিধা নিয়ে থাকে।
বাংলাদেশ মনিটর-এর সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘আগে হাতেগোনা কয়েকটি জায়গায় ট্রাভেল এজেন্সি ছিলো। এখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ট্রাভেল এজেন্সি ছড়িয়ে গেছে। বলা যায়, ঘরে বসে টিকিট বিক্রি করছে। অনলাইন ট্রাভেল ব্যবসাকে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সবমিলিয়ে ট্রাভেল মার্কেটে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।’
যদিও দেশে ওটিএ শুরুর যাত্রা মোটেও সুখকর ছিলো না। হালট্রিপ ও ২৪ টিকিট ডটকমের কয়েকশো কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার ঘটনায় এখনও এজেন্সিগুলোর ওপর আস্থার সংকট আছে গ্রাহকদের।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) মহাসচিব আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, ‘আমাদের এখানে মনিটরিংয়ের অভাব আছে। আবার চটকদার মূল্য ছাড়ের বিজ্ঞাপন দিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতাও হচ্ছে। কিন্তু সেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করা হলে সেটাই বেশি ভালো হতো।’