যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ। এরই মধ্যে নিজেদের প্রমাণ করতে জোর প্রচারণায় নেমেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভোটারদের নজর কাড়তে এবার বেছে বেছে স্যুইং স্টেটগুলো চষে বেড়াচ্ছেন তারা। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন কামালা ও ট্রাম্প। এর আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন দুই প্রার্থী।
তবে এবার নির্বাচনী প্রচারণায় বড় অংশ হয়ে উঠেছে ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধ ও সহিংসতা। বাইডেন প্রশাসনের সীমান্ত নীতি, মুদ্রাস্ফীতি, রাশিয়া-ইউক্রেন ও গাজা-ইসরাইল যুদ্ধের জন্য কামালাকে দোষারোপ করছেন রিপাবলিকানরা। অন্যদিকে, ট্রাম্পকে অযোগ্য ও আসামি বলে খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না ডেমোক্র্যাটরা।
এ অবস্থায় ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা তার রানিং মেট টিম ওয়ালজকে নিয়ে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে প্রচারণায় নেমেছেন। বাসে করে দুই দিন গোটা অঙ্গরাজ্য চষে বেড়াবেন তারা। দলের প্রচারণায় মার্কিন অর্থনীতি ও গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরবেন তিনি। এছাড়াও, জর্জিয়ার তিন ভাগের এক ভাগ কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার নিজেদের দলে টানতে মরিয়া ডেমোক্র্যাট শিবির। কারণ, কামালা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার আগ পর্যন্ত জনমত জরিপে এই অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে, ২০২০ সালে স্যুইং স্টেট জর্জিয়ায় ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয় পায় ডেমোক্র্যাট পার্টি। এবারও সেই ধারা বজায় রাখতে চান কামালা।
ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন, ‘কোনো পরিস্থিতিতেই নিজের অবস্থান থেকে দূরে সরে যাওয়া উচিত নয়। সব পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। আত্মবিশ্বাস ও দলগতভাবে এগিয়ে যেতে হবে। যেকোনো নেতার অধীনেই দেশের জন্য সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করতে হবে।’
এদিকে, স্যুইং স্টেট পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে ট্রাম্পকে ছাড়া একাই নির্বাচনী সমাবেশে অংশ নিয়েছেন রিপাবলিকান রানিং মেট জেডি ভ্যান্স। পেনসিলভেনিয়ার ভাষণে ভ্যান্স বলেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় ১৩ মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনায় কামালাকে জাহান্নামে যেতে হবে। কারণ তিনি ও তার প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন। এছাড়াও, চলমান গাজা সংঘাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসা করছে বলেও অভিযোগ করেন জেডি ভ্যান্স।
রিপাবলিকান দলের রানিং মেট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে ইসরাইলের চলমান অস্থিরতা নিয়ে রীতিমতো ব্যবসায় নেমেছে কামালার ডেমোক্র্যাট দল। হামাস নির্মূলে ইসরাইলের ঘনিষ্ট মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সক্ষমতা ব্যবহার করে খুব দ্রুত এই যুদ্ধ শেষ করতে পারে। এটি খুবই সহজ ব্যাপার।’
এদিকে, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও মুখোমুখি অবস্থানে কামালা-ট্রাম্প। ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তাসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নেও বড় অংকের অর্থ দিয়ে পাশে থাকছে ডেমোক্র্যাট পার্টি। অন্যদিকে ট্রাম্প বলছেন, ডেমোক্র্যাটরা যুদ্ধবাজ দল। বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধ ও সহিংসতা শেষ করার কোনো ইচ্ছেই নেই তাদের।