লোহিত সাগরের দক্ষিণে গ্যালাক্সি লিডার নামের একটি কার্গো জাহাজ আটক করা হয়েছে। জাহাজটি তুর্কিয়ে থেকে ভারত যাওয়ার কথা ছিলো। জাহাজে আছেন অন্তত ২২ জন। ইসরাইলের ব্যবসায়ীর দাবি করে রোববার জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। জাহাজাটিকে ইয়েমেনের বন্দরে রাখা হয়েছে। হুতি মুখপাত্রের হুমকি, যতোদিন গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন চলবে, ততোদিন ইসরাইলের বিরুদ্ধে আগ্রাসন অব্যাহত রাখতে হুতিরা।
হুতি সামরিক মুখপাত্র জানান ইয়াহিয়া সারেয়া বলেন, তারা ইসরাইলের জাহাজ জব্দ করেছেন । ইয়েমেনের উপকূলে আছে সেই জাহাজ। ইসরাইলের যেকোন জাহাজই হুতিদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বলে মন্তব্য করেন তিনি । যদি লোহিত সাগরে কোন দেশের নাগরিককে ইসরাইলের জাহাজ পরিচালনায় দেখা যায়, তারাও লক্ষ্যবস্তু। গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হলে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অপারেশন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন সারেয়া। ইহুদি অঞ্চলের কারণে পুরো অঞ্চলের আন্তর্জাতিক জলসীমা হুমকিতে পড়ে গেছে। এই অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষা হুতিদের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে সারেয়া আশস্ত করেন, ইসরাইলের মালিকানাধীন বা পতাকাবাহী জাহাজ ছাড়া অন্য জাহাজ চলাচলে কোন হুমকি নেই।
হুতি বিদ্রোহীরা আগে থেকেই সতর্ক করেছিলো, ইসরাইলকে যারাই সমর্থন বা সহযোগিতা করবে তারাই বিদ্রোহীদের লক্ষ্যবস্তু হবে। যদিও এই জাহাজের মালিকানা তাদের নয় জানিয়ে ইসরাইল বলছে, আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় জাহাজ জব্দের এই ঘটনা বেশ গুরুতর। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের শিপিং রুটগুলোতে এবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছে তেহরান সমর্থিত হুতিরা। ঘটনার নিন্দা জানায় ইসরাইলের সেনাবাহিনীও। এই জাহাজে কোন ইসরাইলি সেনা নেই বলেও দাবি তাদের।
এদিকে, এই জাহাজে আটকে পড়া ক্রুদের দ্রুত ছেড়ে দিতে হুতি বিদ্রোহীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাপান। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষদ বলছে, লোহিত সাগরে জাহাজ জব্দের ঘটনা আন্তর্জাতিক নীতিবিরোধী। ইসরাইল বলছে, জাহাজে থাকা ক্রুরা মেক্সিকো, ফিলিপিন্স আর বুলগেরিয়ার নাগরিক। যদিও তাদের ভাগ্যে কি আছে, জানে না কেউ।
অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ইসরাইলে অনেকবার ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে হুতিরা। হুতি বিদ্রোহীদের ঝুঁকি মোকাবিলায় লোহিত সাগরে আরও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ইসরাইল। ২০১৪ সালের গৃহযুদ্ধের পর থেকে ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে লোহিত সাগরের পাশে বন্দর শহর হোদেইদাহ নিয়ন্ত্রণ করে ইরান সমর্থিত হুতিরা। তাদের হুমকি, ইসরাইলের কোম্পানি কিংবা ইসরাইলের পতাকাবাহী যেকোন জাহাজ তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু।